সুন্দরী বউয়ের একা একা হোটেলবাস!

সুন্দরী বউয়ের একা একা হোটেলবাস!

ফ্রি কালচার, ফ্রি সেক্সের দেশ।
যখন তখন, যা ইচ্ছা তার সঙ্গে সব কিছু করা যায়। মাতৃতান্ত্রিক সমাজ – জামাই এক ঘুষি দিলে, বউ দুই ঘুষি দেয়।
এমন বাস্তবতায় মহামতি’র সুন্দরী বউ – একা একা সেন্দাই গেছে এমবিও পরীক্ষা দিতে। এই ভাবনায় মহামতির নয়, বাঙালী কবি শুদ্ধের ঘুম হারাম। দীর্ঘদিন জাপানে থাকার পরও কবি শুদ্ধ নিজের অজান্তেই নারীকে সন্দেহ করে। চরম সন্দোহ করলে পুরুষের দেহমনে কি ধরনে অদ্ভদ রসায়ন ঘটে, কাব‍্যে তা প্রকাশে কবি শুদ্ধ বুঝার চেষ্টা করছে।
কবি শুদ্ধের চিন্তা চেতনায় নানান রঙের খেলা দেখে মহামতি হতবাক।
– কবির হলোটা কি? এত হাসিখুশি মানুষ। কিন্তু আজ খুব বিমর্ষ।
কোনক্রমেই কবি শুদ্ধ নিজেকে মানাতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে মুক্ত কালচারের দেশে থাকার পরও তার মন – প্রচীনতা, পুরুষতান্ত্রিক সন্দেহের প্রাচীর অতিক্রম করতে পারছে না।
কফি ব্রেকের সময় সামনা সামনি কফি পান করা কালে – কবির অস্থিরতার কারন জানতে চায় মহামতি। কবি শুদ্ধ বলে,
– আপনার সুন্দরী বউ যে গত তিন ধরে বাড়িতে নাই, একা একা হেটেলে থাকছে, আপনার মনে কি কোন রসায়ন হয়নি?
– না, তা হবে কেন? রসায়নবিদ‍্যা তো বইয়ে, ল‍্যাবে মানুষের মনে থাকা শ্রেয় না।
এ বলে মহামতি হাসতে থাকে।
– হুম। তয় আগে হতো। নানান ধরনের অযথা প্রশ্ন, সন্দেহ ও ভয় মনে জাগতো। এখন জাগে না।
– কিভাবে বদলালো?
– বিশ্বাস। আমি এখন প্রকৃত ঈমানদার। মানুষ হয়ে মানুষকে বিশ্বাস না করলে, খামিসামাকে বিশ্বাস করবো কিভাবে?
– হু, বাংলাদেশে থাকতে কেমন লাগতো?
– বিষয়টা নিয়ে দোজখের ভয়ের মত কাতর থাকতাম। সামর্থ‍্য না থাকার পরও তুলনামূলক নিরাপদ ধানমন্ডিতে থাকতে হয়েছিল।
– হু
– ভয় তো বিদেশী সুন্দরী নিয়ে ছিল না। ভয় ছিল পিছু ধরার মোনাফেকদের নিয়ে। হোটেলে কখনো একা থাকেনি – খোদ হোটেলম‍্যান, ম‍্যানেজার আর মালিকদের চোখে আগুন দেখে থু থু দিতে মন চাইতো। পঁচা সেই মানুষ গুলো হয়তো এখনো বদলায়নি। বাংলাদেশে কোন নারী হোটলে যাওয়া সাথে সাথে আমিনিশ্চিত প্রথম এই প্রশ্নের মুখোমুখি হবে,
– স্বামী কোথায়?
– যদি বলে তার দরকার কি। আমি টাকা দিয়ে হোটেলে থাকবো স্বামী লাগবে কেন। স্বামীর তো বউ লাগে না, বউয়ের পরিচিত লাগেনা।
এই প্রশ্ন পাওয়ার সাথে সাথে হোটেলম‍্যানরা নিশ্চুপ থাকলেও বলে- স্বামী ছাড়া বা স্বামীর পরিচিতি আমাদের এখানে গেষ্ট রাখার নিয়ম নাই।
হয়তো চেকইনে থাকা এন্ট্রিবাবু, ম‍্যানেজারকে ডাকবে আর মনেমনে বকা দিবে, স্বামী ছাড়া ভালো মেয়েরা হোটেলে থাকবে কেন?
শুনতে মন্দ লাগলেও এটা সত‍্য, বাংলাদেশে অধিকাংশ সাধারন মানুষ নারীর বিষয় নিয়ে মাত্রারিক্ত হিন্ন্যমন্য, বহুত অনিরাপদ। হোটেলে থাকা মানেই ভেবে নেয়, মেয়েটা ভালো না, চরিত্রে সমস‍্যা আছে।
– আমারও তাই মনে হয়! তবে অবস্থা বোধহয় এত খারাপ না।
– হ, তোমার বিশ্বাস হয় না? তুমি একবার বাংলাদেশে গিয়ে তোমার সুন্দরী বউকে হোটেল একা একা এক রাত হোটেল রেখ দেখ, তুমি বা তোমার বউ ঠিক মত ঘুমাতে পার কিনা? বারবার তোমার বউ হোটেল থেকে, আর তুমি বাড়ি থেকে মোবাইল করে করে রাত পার করে দিবে। আমি মাঝে মাঝে ভাবি- ধর্মের দেশ, ৭০%+মুমিনের দেশ, কিন্ত এমন অপরাদ প্রবন হবে কেন? এত অধার্মিক হবে কেন?
– ধর্ম না ছাই। ধর্মের দেশ না, ধর্ষনের দেশ। মোনাফেকের দেশ, থুক্কু বেশী বইরা ফেললাম। যাকগে, এত হারমাতির কারণটা কি মহামতি?
– গাছের গোড়াতে ভুল। সেখানে কলম দেয়া ছাড়া গতি নাই রে কবি, গতি নাই। মন দিয়ে কবিতা লিখ, হয়তো বাংলার বিবেক একদিন জাগবে।
– বুঝলাম। তাহলে বিষয়টা নিয়ে জাপানে আপনার কেমন লাগে?
– ভালো, শতভাগ নিশ্চিত। দেখছো না, আমি পুরো শান্ত? এখানে নারীকে নারী মনে করা হয় না, মানুষ মনে করা হয়।আমি নিশ্চিত সে বাড়ির মতই নিরাপদে থাকবে। যদি কোন কিছু হয়, তবে তার সম্মতিতেই হবে, অসম্মতিতে কিছু হলে হোটেল সিস হয়ে যাবে। মহামতির বউ, অন‍্যপুরুষকে ধরাধরি- এমন অবিশ্বাসের কাজ সে করবে না।
– আমি তো অনেক ভয়ে ছিলাম। আমার এক চাচা, দেশে বউকে বাড়ির বাহিরে এক রাতের জন‍্যও থাকতে দিতে চাইতো না। কোন কারণে অফসার বউকে অফিসের কাজে অন‍্য জেলায যেতে হলে, তিনিও পাহারাদারের মত ছুটি নিয়ে বউয়ের সঙ্গে যেতেন। একবার যেতে পারে নি, আর সেই বারই এক হারমাতি আক্রমন করেছিল। সব শেষের পর হত‍্যা করেছিল!
এ বলে কবি শুদ্ধ কেঁদে দেয়।
– হু। এগুলো বলে আর কষ্ট নিও না, কষ্ট দিও না। আমাদেরকে কারণ আবিস্কার করে, সেখানে চিকিৎসা করতে হবে।
– হবে না মহামতি! হবে না!
– হবে না কেন? আশা হারানো পাপ। বেড়ায় ক্ষেত না খেলে হবে।
– তা কিভাবে সম্ভব?
– শিক্ষা, শিক্ষা আর শিক্ষা। এরপর আইনের শাসন, সচেতনতা ও মানুষের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা থাকলে সব অন্ধকার দূর হয়ে যায়।

কালো আইন, নাকি সাদা আইন?

কালো আইন, নাকি সাদা আইন?

আমিও সকল কালো আইন বাতিল চাই, তবে বাঙালিকেও একটু সভ‍্য হতে হবে, সেলফ সেন্সরশীপ শিখতে হবে। কোনটা করা যাবে, কোনটা করা যাবে না, কোনটা বলা যাবে, কোনটা বলা যাবে না – সেই সীমাটা বুঝতে হবে। যা ইচ্ছা তাই করা, যা মন চায় তাই বলা – পৃথিবীর কোন সভ‍্য দেশের সংস্কৃতিতে নেই। এটা গনতন্ত্র বা স্বাধীনতা না, এটা বিশৃঙ্খলা, অপব‍্যবহার, স্বার্থপরতা নগ্নপ্রকাশ।

স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচারিতা না। স্বাধীনতা মানে- দায়িত্বশীলতার সাথে, নিজের ও অন‍্যের ক্ষতি না করে, সমাজ কল‍্যান ও মানব কল‍্যান করা।

যে আইনকে আমরা কালো বলছি, সেই আইন ছাড়া কতটুকু অসভ‍্যতা আমরা দেখিয়েছি, কতজনের জান-মাল, মান-সস্মান নষ্ট করেছি, অযথা অন‍্যের কাপড় খুলে, হঠাৎ লুঙ্গিতে টান মেরে ইয়ার্কি করেছি, সেটাও আমাদেরকে জানতে, বুঝতে ও মানতে হবে।

নইলে আমাদের সেলফ জাস্টিফেকশনের মাত্রার তীব্রতা কমবে না। সমাজে সুশীলতা, গনতন্ত্র তথা প্রকৃত শান্তি ও উন্নয়ন আসবে না।

নিরপেক্ষ ভাবে যদি বিচার করি, আমি বলবো – দেশে বাক স্বাধীনতা নাই এই ধারণাটা ভুল । জাপান ও উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক বেশী স্বাধীনতা আছে। জাপানে অনুমতি ছাড়া অন‍্যের জামাই-বউ, পুত্র-কন‍্যার মুখ তো পরের কথা, নিজের পোলাইপানের ছবি মিডিয়াতে দেয়া যায় না। আইনে যা আছে তার বিপক্ষে টু শব্দ করা যায় না। কিন্ত আমার বাংলাদেশে হরহামেশা করি।

জাপান সহ উন্নত কোন দেশে, মানহানিমূলক সমালোচনা তো পরের কথা, অন‍্যে রারান্দায় দাড়িয়ে ছবিও তোলা যায় না।
– কপিরাইট বা প্রাইভেসী লঙ্গন করলে বাসায় পুলিশ আসে, মামলা হয়।

আমি একবার জাপানে পড়শী একজনের বাগানের সিঁড়িতে বসে ভিডিও করেছি, বাসায় পুলিশ এসেছিল, সাবধান করে গেছে। পুশিশ বলেছে,
– দ্বিতীয় বার ভুল হলেও, আপনি গ্রেফতার হবেন। কারণ লোকটি অভিযোগ করেছে,
– আপনার সে ডিস্টার্ব ফিল করেছে। অনিরাপদবোধ করেছে।

আর আমরা বাংলাদেশে, বিশেষ করে হেফাজত, বিএনপি-জামাতিরা পারলে তো প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর কাপড় খুলে ফেলে। মন্ত্রীমিনিষ্টারদের ল‍্যাং মারে, চাঁদের বুড়ির সাথে সাইদীর বিবাহ দেয়, ফেইসবুকে ঘোষনা দিয়ে রেলে আগুন দেয়, হিন্দুদের সম্পদ লুট করে, বাসে প্রেট্রোল বোমা মারে, চাপাতি দিয়ে ভিন্নমতের মানুষকে দৌড়ায়, মুমিনূলরা ধর্মের নামে মানুষ হত‍্যার পর হোটেলে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ফূর্তি করতে যায় ইত‍্যদি

যাইহোক যতই না বুঝার ভাব লই না কেন- আমরা সবাই বিষয়টা জানি ও বুঝি। আসলে আমরা অধিকাংশই স্বার্থপর, ‘গোয়ালঘর থেকে ছুটা বাছুরের মত চলছি। এমন অবস্থায় কড়া আইন না করে কি উপায় আছে? আইন – নরম বা গরম যাই হোক না কেন, প্রয়োগ হলে সব গরম হয়ে যায়, কেউ টু শব্দ করতে পারে না আইনের শাসনের দেশে।

আমার তো মনে হয়, আমরা যে ভাবে ডিজিট‍্যাল দুনিয়াতে অসুরের মত নাচি, সেভাবে সৌদি ও মধ‍্যপ্রাচ‍্যের কোন দেশ হলে শরীয়াহ’র নামে কতল/ শিরোচ্ছেদ প্রথা চালু হতো। ইউরোপ আম্রিকা ও জাপান সহ সব দেশে তো জরিমানা সহ মানহানির কেইস অহরহ হচ্ছে, রথি-মহারথি কেউ আইনের ফাঁক থেকে বের হতে পারে না।

তাই আমাদের দেশে আইনের ব‍্যবহারে শুভঙ্করি আছে, ফাঁকফোকড় আছে, স্বজনপ্রীতি-দলপ্রীতি আছে; এগুলো দেখতে আরাম লাগে না। যদি পুরোপুরো উন্নত দেশের মত হয়, আমি নিশ্চিত সবার আরো বেরাম লাগে।

আমি এ কথা ও অভিজ্ঞতাটা যাদে ভালো লাগেনি, উন্নত দেশে থাকা তাদের বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজন, দুলাভাই-শালাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, তারা কি সে দেশে বাংলাদেশে আইন ভেঙ্গে থাকে বা থাকতে পারে?

———
My related video
জাপানে আমাকে পুলিশে ধরে ছিল !!
– https://fb.watch/5iue-TDUJL

সিনেমার নাম ‘পুলসিরাত’

সিনেমার নাম ‘পুলসিরাত’

করোনাকালের পুলসিরাত পার হচ্ছি! এইবারের মত বোধহয় বেঁচে গেলাম।

হে বিশ্বাসীগণ জেনে রাখ –
শেষ বিচারের দিনে কেউ যে বিনা বিচারে পার পাবে না, কেউ হেল্প করবে না, বুঝে আন। সবাই নিজের আমলনামা নিয়ে, নিজকে পার করতে দৌড়ের উপর থাকবে, ঠিক করোনাকালের মতো।

আমলনামা ঠিক না থাকলে, খুন-খারাপি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, হত‍্যা-ধর্ষন, বউ পিটানো, জামাই পেদানো, পরসম্পদ পরনারী হরণ, এক কথায় ‘বিশ্ব মানবাধীকার সনদ- লঙ্ঘন করে, বহু বিবাহ করে, সর্বহারা খেদিয়ে দুই নম্বরি করলে; সাধুসন্ত, নবী-রসুল, রথি-মহারথি কেউ পার পাবে না। সেদিন ধর্মরাজ হবেন ‘কাঁহার’! শতভাগ ন‍্যায় বিচারক! অতএব সাধু সাবধান!!

কাউকে ভয় দেখিয়ে, লোভ দেখিয়ে, হিংসা শিখিয়ে, গ্রুপিং করে, ত্রাস-সন্ত্রাস-দূনীতি করে, বকধার্মিক সেজে আত্নতুস্তিতে থাকার চেষ্টা করবেন না । দুই কাঁধে কিন্তু দুই এঞ্জেল – ‘মুনকার ও নেক্কির’ নিয়মিত ভিডিও ফ্লিম করছে । সেইদিন সব কর্ম – হলিউডের সিনেমার মত চকচকে, ঝকঝকে প্রিন্টে সবার সামনে প্রদর্শিত হবে।

শাস্তি তো পরের কথা – ধর্মরাজের সমানে নিজের ব্লু-ফিল্মটা নিজে দেখে কি সেদিন কি শরম পাবেন না? অতএব যতদূর সম্ভব ভালোবাসো, নিজের সুকর্মে রুমান্টিক সিনেমা বানাও। এতে নিজের ও অন‍্যের সহজ মুক্তি হবে। শেষদিনে সিনেমাও চলবে স্ব-গৌরবে।

এসো ফেইসবুক ঝামেলা থেকে মুক্ত হই।

এসো ফেইসবুক ঝামেলা থেকে মুক্ত হই।

জেনে বা না জেনে, বুঝে না বুঝে আমরা ফেইসবুকে মাত্রারিক্ত ভাবে যুক্ত হয়েছি। আমাদের চেনা-অচেনা অনেক বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক হয়েছে। আমার পরিবারিক ও ব‍্যক্তিগত অনেক তথ‍্য, ছবি ও ভিডিও সহজে প্রকাশের কারণে আর্কাইভ হয়েছে। ভাবগতি দেখে মনে হচ্ছে এটা পুরোপুরি বাদ দেয়া যাবে না। তবে সোশাল ডাইট সম্ভব। আবেগে তাড়িত হয়ে মাত্রারিক্ত ব‍্যবহারের কারণে আমাদের অনেক মূল‍্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। আসল কাজ থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ খাতে মনযোগ চলে যাচ্ছে , যা অনেকটা ঝামেলার। ফেইসবকু ঝামেলা থেকে পরিত্রাণের আমার সহজ বুদ্ধি –

১) মোবাইল থেকে ফেইসবুক ও ইন্ট্রোগ্রাম এপস ডিলট করা, এবং ব্রাউজ করে ব‍্যবহার করা।
২) সকল অটো-রবোটিং নোটিফিকেশন অফ করা, হিউম‍্যান কমিউনিকেশনকে গুরুত্ব দেয়া।
৩) প্রয়োজন ছাড়া নিউজফিডে আনলিমিটেট স্ক্রল না করা ।
৪) অন‍্যের পোষ্টে কমেন্ট ও লাইক শেয়ার কম করা । নিজের পোষ্ট দেয়া। সময় নষ্ট বহুদিনে গড়া নিজের সম্মানহানি করা। বিষয়টাকে অতি আবেগে তুচ্ছ না ভাব।
৫) পত্রিকার মত নিদ্দিষ্ট সময় ফেইসবুক খোলা/পড়া। দিনে একবার বা দুইবার , শুধু কম্পিউটার থেকে , ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের বেশী ব‍্যবহার না করা।
৬) ফেইসবুক যে সময় নষ্ট করে, আমাদের জন‍্য অলাভজক হলে জুকারবাঘের জন‍্য এটা মহালাভের এই বিষয়টা মনে আনা ।
৭) ফেইসবুকে বদলে অন‍্য সোসাল মিডিয়া যেমন – লিঙ্কডইন ব‍্যবহারে মনোযোগী হওয়া।
৮) ফেইসের মাধ‍্যমে অতি সহজে ধনী ও বিখ‍্যাত হওয়ার মানসিকতা পরিত‍্যাগ করা। লাইক ও শেয়ার হাঙ্গার পরিত‍্যাগ করা।
৯) অন‍্যকে বদলানো বদলে, নিজের বদলানো ও উন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া। অন‍্যের টাইম লাইনে অযথা গোয়েন্দাগিরি
না করা।
১০) সকল প্রকার এআই নোটিফেকিশেন বা এলার্ট বন্ধ রাখা
১১) যে সব বন্ধু, আমার মত অতিরিক্ত পোষ্ট দেয়, যাদের ভয় বা হিংসা লগে তাদেরকে আনফ্রেন্ড বা আনফলো করা
১২) যাদের সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি বা হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাদেরকে আনফ্রেন্ড করা। কারণ তারা এক ক্লিকের বন্ধু, হয়তো ফেইক ও অনিরাপদ।
ইত‍্যাদি

আমি সবগুলো করতে পারলেও ৫ নম্বরটা করতে পারি না ।কাজের কারণে আমাকে সব সময়ই অনলাইনে থাকতে হয়। কম্পিউটার এখন আমার শরীরের অংশ হয়ে গেছে।

প্রথম আদম ও ইভের সন্ধানে…

প্রথম আদম ও ইভের সন্ধানে…

ছোট বেলা থেকে আমার একটা ভদ্রবাতিক আছে, সব কিছুকে বিজ্ঞান, যুক্তি ও নান্দিকতার সাথে মিলানোর চেষ্ঠা করি। আমি মোটাসোটা লাজুক মানুষ, তাই আমার বুদ্ধিও একটু মোটা – আসল জায়গায় হাত দেই তবে প্রতিবাদী, সংশয়বাদী এক কথায় গোড়া নাস্তিক বা আস্তিকদের মত একরোখা হতে পারি না। একটু নন্দ দুলালের মত হেলেদুলে চলতে ভালোবাসি । ফলত আমার চিন্তা-চেতনা খুনসুটি থাকলেও গাঢ়ে ত্রাস ও রুখতা ভর করতে পারে না।

অনেক চিন্তা ভাবনা করে বুঝলাম, আমার ম্বভাবটা সনাতনি ও সেকেলে হলেও নিরাপদ। যার সারমর্ম- ধর্ম ও দর্শন ছাড়া যাবে না। কারণ আমি এখনো মনেকরি ‘ধর্ম-কালচার, দর্শন-মিথ’ সত‍্যের মন, অদৃশ‍্য রুপ। মন ছাড়া সত‍্যের দেহ, মানে দৃশ‍্যমান সত‍্য- বিজ্ঞান মৃত।

এক কথায় ধর্ম-দর্শন প্রমানহীন সত‍্যের প্রস্তাবনা, আর বিজ্ঞান হলো সত‍্যের প্রমানযুক্ত প্রস্তবনা। এ বিষয়ে আমি প্রিয় বিজ্ঞানী আইনষ্টাইনের সাথে একমত,
‘ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান ল‍্যাংড়া, আর বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধত্ব’।

বিজ্ঞানীদের ও আমার ধর্মটা অবশ‍্যই মোল্লাতান্ত্রিক আচারে , বাতাসা-প্রসাদ, পূজো-হরিবল, ওয়াজ-মহফিলে সীমাবদ্ধ নয়। হৃদয় থেকে হৃদয়ে, ভালোবাসায়, প্রকৃতিক নিয়মে সারা মহাজগতে উদ্ভাসিত, আলোকিত।

দর্শন, ধর্ম ও বিজ্ঞান প্রেমিক হওয়ার কারণে আমার দিনের অধিকাংশ সময়ই অজান্তে অলাভজনক চিন্তায় ব‍্যয় হয়। ক্লাইটের কাজ করার পরে যা সময় পাই, তার পুরোটা ব‍্যায় হয় ‘টুকিটাকি পড়া ও লেখালেখিতে’, একটু এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করে ছবি তোলতে। শিল্প, দর্শন ও উন্নয়ন- আগ্রহের বিষয়ে কোথায় নতুন তথ‍্যের আঁচ পেলে – জানার জন‍্য আমি উৎগ্রীব হয়ে যাই।

তুখোড় ব‍্যবসা সফল সালাফি ‘জাকির নায়েক’কে নিয়ে একটি পোষ্টের সূত্র ধরে জানলাম – ‘আদম ও ইভের’ কাহিনি আক্ষরিক সত‍্য না, প্রতীকি সত‍্য। খ্রি. পূ. ২৫০০-৩০০০ সালের দাপট- আক্কাদিয় জাতির লোককথা, নৈতিকমিথ ( Research link: https://bit.ly/3EAs0SF ) থেকে নেয়া। এই মিথের উপর ভিত্তি করেই ইহুদী বাইবেল ( ওল্ড টেষ্টামেন্ট – মানে তাওরাত ও যবুর ) এর প্রথম অধ‍্যায়- ‘জেনেসিস’ রচিত। যার মুলস্তম্ভ এক ইশ্বরবাদী সকল সেমেটিক ধর্মের।

মিথ মানে লোককথা, রুপকথা। তাইতো আদম ও ইভের মিথের কোন ঐতিহাসিক ও জিওলজিক‍্যাল প্রমানিক ভিত্তি নেই। থাকা সম্ভবও না।

মিথ, ধর্ম, দর্শন নিয়ে এত ঘটাঘাটি করি তারপরও ১৯৮১ সালে আদম হাওয়া’ নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা- ‘THE MYTHICAL RELATIONSHIPS BETWEEN: ADAM AND THE MYTHS OF ANCIENT MESOPOTAMIA’ বহু বছর পর
হাতে পেলাম। তাই একটু রিগ্রেট ফিলিং হয়েছে।

আমি জিওলজি পড়া, ধর্মীয় স্বাধীনতা বিশ্বাসী একজন সর্বধর্মীয় ভক্ত, মানবাধীকার ও মিডিয়া কর্মী। জিওলজিক‍্যাল টাইমস্কেলে পৃথিবীর ৪.৫ বিলিয়নের বছরের ইতিহাস প্রমানিত। প্রধান প্রজাতির প্রায় সকল জীব ও প্রানের অস্তিত্ব ফসিল ও নানান উপায়ে প্রমানিত হয়েছে। জিওলজি বা আরকিওলজিতে অপ্রমানিত ‘ইডেন গার্ডেন’ নিয়ে প্রশ্ন করে, আমি মাঝে মাঝে ঘেমে যাই। উত্তরের কোন কুলকিনারা পাই না।
– যে আদম ও হাওয়াকে পৃথিবীর প্রায় ৪০০-৫০০ কোটি সেমেটিক বিশ্বাসীরা প্রথম মানব বা মানবী বলে মান‍্য করে , তারা কি আসলেই ঐতিহাসিক বাস্তব চরিত্র? এ প্রশ্নের উত্তর যদি মিথ‍্যা হয়, তবে সংখ‍্যা গরিষ্ঠ সেমেটিকদের বিশ্বাসের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে যাবে। হয়তো এ কারণেই আব্রাহামিকরা বিষয়টা নিয়ে তেমন ঘাটাঘাটি করে না।

প্রমানিত না হলেও – আবেগগত ও সাইকোলিক‍্যাল দৃষ্টিতে- আমি
বাবা আদম, মা হাওয়া ও ইডেন গার্ডেনের মহানাটককে মানি, পারিবারিক নৈতিক শিক্ষা আলোচনায় যত্রতত্র ব‍্যবহার করি। আমাদের পারিবারিক সম্পর্কে ইডেন গার্ডেনের সমরুপ খুঁজে পাই।

সংসারের কর্তাকে আদম, কর্তীকে ইভ, আর ঝামেলা সৃষ্টিকারী তৃতীয় পক্ষকে লুসিফারের ভূমিকাতে বিচার করলে, জটিল অঙ্কটা সরল হয়ে যায়। গন্দম ফলকে যদি ‘প্রিমেরাইটাল বা এক্সটা মেরাইটাল সেক্স’ গন‍্য করা হয়, তবে তো মানবের পতনের কারণটা বুঝা যায়। তবে গডের পজিশন রুপক ও বাস্তবে একই। কারণ তিনি সর্বব‍্যাপি, সয়ম্ভু, নিরাকার, পরম ভালোবাসার আধার।

যাইহোক আদি এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত অনেক আলোচনা করা যেতে পারে। আমার ‘বুঝ ও দর্শন’ অন‍্য আরেকটি প্রবন্ধে তুলে ধরবো।

সর্বোপরি আমার প্রস্তাব – ধর্মীয় সত‍্যের নামে অনেক মিথ‍্যা আমাদের জীবন, সংসার ও বিশ্বকে আদি-অজগরের মতে আষ্টেপিষ্টে গ্রাস করে আছে। যা অনেক সময় আমাদেরকে অন্ধ ও বিবেকহীন করে দেয়। তাই কোন কিছু বিশ্বাস ও আচার হিসাবে পালনের আগে আমাদেরকে অবশ‍্যই প্রশ্ন করতে হবে। প্রমানিক বা অপ্রমানিক যেভাবেই সঠিক মনে হোক না কেন – অন‍্যের ও নিজের জীবনের জন‍্য ক্ষতিকর কোন কিছু গ্রহন করা যাবে না। প্রচার ও প্রসার করা ঠিক হবে না। অযথা সম্পদ, শক্তি ও সময় না করাই শ্রেয়।

যেই আদম-হাওয়া আক্কাদিয় জাতি মিথ, তাকে যদি ‘শ্রীলংকার’ আদমশৃঙ্গের শ্রাইনে খুঁজে বেড়াই – সেটা যেমন সঠিক সত‍্য হবে না, আবার প্রতিকী গল্পকে বাস্তব বলাটাও ঠিক হবে না।

কল্পনাও অনেক সময় বাস্তবের চেয়েও বাস্তব হয়। তাইতো কবিগুরু বলেছেন।

“….নারদ কহিলা হাসি, সেই সত্য যা রচিবে তুমি-
ঘটে যা তা সব সত্য নহে। কবি, তব মনোভূমি
রামের জনমস্থান, অযোধ্যার চেয়ে সত্য জেনো।’ …”


Art Credit: Wiki Pedia
Artist: Peter Paul Rubens, Jan Brueghel the Elder
Year: c. 1615