হিমালয় ও আমার উন্থান।

হিমালয় ও আমার উন্থান।

‘হিমালয়ের উন্থান’ প্রাচীন কালের আমার একটি লেখা, জাপানি যৌতুক ও ভালোবাসার পাহাড়।

১৯৯৭ সাল, যে যুগে আমার ল‍্যাপটপ ও আইফোন ছিল না, সে যুগের আমার একটি লেখা- ‘হিমালয়ের উন্থান’। পুরাতন পান্ডুলিপি’র গাট্টিতে আজ পেপার কাটিংটি খুঁজে পেলাম।

লেখাটি ছাপা হয়েছিল মুক্তকষ্ঠে , ১৯৯৭, ১৫ সেপ্টেম্বর। তখনো আমার প্রাণে বিশ্বাস ছিল, আমি লেখক হতে পারবো। বিশ্ববিদ‍্যালয়ের লেখাপড়া শেষে, ভূবিজ্ঞান পড়েও বিজ্ঞানী হতে মন চায়নি। কেরিয়ারিষ্ট না হয়ে, গান্ধীজি-ফুকুওকা’র মত অলটারনেটিভ হওয়ার দারুণ সাহস দেখিয়েছিলাম। টানা পাঁচ বছর লেখালেখির চেষ্টা করেও যখন দেখলাম – ৫০০০ হাজার টাকাও রোজগার হয়নি। চাকুরি-বাকরির খবর নাই । তখন বুঝলাম এপথে আর থাকা যাবে না। আব্বা-আম্মার চরম বকাবকিতে লেখালেখি ছাড়লাম, কাগজ-কলম ছেড়ে মাউস-প‍্যাড ধরলাম, মাল্টিমিডিয়া ডিজাইনে মন দিলাম, বিয়ে করার চিন্তা শুরু করলাম। ভাবতে শিখলাম,
– ‘সংসার ধর্ম, পরম ধর্ম’! জীবন- সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আর ভালোবাসায় ভর্তি। এবার সংসার শুরু করতেই হবে।

কিন্তু ইত‍্যিমধ‍্যে সাত বছর পার হযে গেছে। পরিচিত সব সুন্দরীর বিয়ে হয়ে গেছে। জুনিয়র যারা খালি ছিল, তারাও চিনেও না চেনা, না চেনার ভান করতো। পরে কারণটা বুঝলাম,

কারণটা অনেকাংশে অর্থনৈতিক। গায়ের বঙ্গবাজারের কমদামের টিশার্ট’, চোখে সানগ্লাস নাই, হেঁটে গেলে সুগন্ধির ভুরভুরি না ঝরা, তাই হয়তো কেউ রাজি হয়নি। আগ্রহ দেখায় নি, এমনকি গররাজিও না।

সবচেয়ে বড় কষ্ট – একটি রিজিওনাল এনজিওতে জান-কোরবান ভলেন্টিয়ার ছিলাম। শত শত সুন্দরীর আনাগোনা ছিল সেখানে। নিয়মিত রুমান্টিক গল্প শুনতাম, উল্লাসিত ও উত্তেজিত হতাম। সবাই আমার চরিত্র সততা, কাজে দক্ষতা ও একাগ্রতার প্রশংসা করতো – কিন্তু একজন বাঙালী নারীও বলেনি – আই লাভ ইউ।

বাংলার নারীদের পছন্দ শেষমেষ বুঝেছিলাম। ভালো ছাত্র ও ভালো চরিত্রে অধিকারী হলেই যে ভালো বাঙালি বউ পাওয়া যায় না – তার প্রমান আমি। ১৬বছর শিক্ষা জীবনে ৯বার ক্লাসে প্রথম হয়েছি, চেহেরা হিরোদের মত না হলেও খারাপ না, জীবনে কোন চুরি-ডাকাতি, গুন্ডমি-বদমাইশি করি নাই, সে দিকে কোন বাঙালি সুন্দরী চোখ যায়নি, চোখ গিয়েছে আমার নিলামী শার্টের পকেটের দিকে।

স্বেচ্ছায় দারিদ্রতা প্রহন মহামতি-মানবদের জীবনে গ্রহনীয় হলেও, সাধারণ জীবনে নয়। মহামতি ষ্টাইলে জীবন-যাপন-দর্শন থাকার পরও, বাঙালি নারীদের প্রফেশন‍্যাল ভালোবাসার বলয়ে ঢুকতে না পারার এত ভালোবাসা হীনতা, এত ব‍্যর্থতা, এত অবহেলাতেও আমার মন খারাপ হয়নি। দিন দিন বিয়ে ও সংসার নিয়ে আমার ধারণা পাল্টাতে শুরু করলো – বিয়েশাদী যত না রুমান্টিক ভালোবাসা, তার চেয়ে বেশী অর্থনৈতিক।

আল্লাহ’র কি লীলা। যখন বাঙালি ললনারা বেরাজি, তখন দূরপ্রাচ‍্য থেকে জাপানি সুন্দরী আমার লাগি ঢাকায় হাজির। অল্প কয়েকদিন একলগে খিচুরী খেয়েই বিনা যৌতুকে বিয়ে করে ফেললাম। জীবনে প্রেম আসার সাথে সাথে আমার লেখালেখির প্রেমও চলে গেল, মাল্টিমিডিয়া প্রফেশ‍ন‍্যাল হওয়া দরজা খুলে গেল, রোজগার শুরু হলো ।

আমি বরাবরি লোভ ও যৌতুক বিরোধী। তারপরও বাঙালির স্বভাব মত গোপনে ভেবেছিলাম- জাপানি বিয়ে করলাম। বিরাট ধনী দেশের মানুষ। এবার সাত বছরের বেকার জীবনের রোজগারের উসলটা মিটে যাবে। এক লাফে বিলিয়নিয়ার হযে যাবো। তার আর হলো না !
– অভাবা যে দিকে তাকায়, সেদিকে সাগরও শুকায়।

সবেমাত্র বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন করছি, কমদানের রেস্টুরেন্টে নতুন বউকে নিয়ে তেহারি-বিরানী খাই। একদিন সুন্দরী বলে,
– আপনার তো এখন টাকা নেই। এক বছর আমি জাপানে কাজ করতে চাই। রোজগারের পর সংসার শুরু করবো। কি বলেন?
আমি নীমরাজি হয়ে বললাম – ঠিক আছে, যা ভালো তাই করেন, আমার ভিন্নমত নাই।

নতুন বউ জাপানে চলে আসলো। বউয়ের অনুপস্থিতিতে মোহাম্মদপুরে মেছের বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবতাম। বউ আমার জাপানে কাজ করেছে। বেতন মাসে অন্ততঃ দুই-তিন লাখ তো হবেই । এবার আমার বিলিয়ন হওয়া পথ কেউ আটকাতে পারবে না। এক বছর পর, ঢাকায় স্থায়ীভাবে যাওয়ার আগে বউ আমার জিজ্ঞাসা করে,
– আপনার জন‍্য জাপান থেকে কি আনবো?
যৌতুক হতে পারে, তাই আমি কিছুতেই রাজি হলাম না। বললাম,
– আমার জন‍্য কিছু লাগবো না। আপনি চলে আসেন। আমার তো এখন দৃকে চাকুরি আছে। বেতন কম হলেও, খারাপ না, চলা যাবে।

দৃকে যোগদানের পরের থেকেই ফটো্গ্রাফার হবার- আমার ‘সুপ্ত ভাবনা’টা জাগ্রত হয়েছিল। কিন্তু প্রফেশ‍ন‍্যাল ক‍্যামেরা কিনা সামর্থ‍্য ছিল না। তাই কাউকে নিজের স্বপ্নের কথা বলতাম না। বলতাম – আমার কাজের এরিয়া মাল্টিমিডিয়া ডিজাইন, এই লাইনেই থাকতে চাই।

প্রায়শঃ মনে মনে ভাবতাম, জাপান থেকে বউ যদি একটা ক‍্যামেরা আর ল‍‍্যাপটপ আনতো ভালোই হতো।
একবছর পর- বিমান বন্দরে বউকে রিসিভ করার সময়, অনেকগুলো ব‍্যাগ থেকে একটা সুন্দর ব‍্যাগ আমার হাতে ধরিয়ে বলে,
– এটা আপনার জন‍্য। এখানে একটি ডিজিট‍্যাল ক‍্যামেরা আছে – সনি সিডিক‍্যাম, আর একটি হিটাচি ল‍্যাপটপ ।
কথাটা শুনে, আমি যেন ভালোবাসার চাঁদ হাতে পেয়েছিলাম। মনে আমার আনন্দ যেন আর ধরেনি। নতুন বউয়ের চেয়ে , ব্যাগটাকে আপন ও কাছে মনে হচ্ছিলো।

জাপানিকে বিয়ের পর শুরু হযেছিল আরেক ঝামেলা। রাস্তায় হাত ধরাধরি করে হাটলে, অপরিচিতরা জাপানি ললনার জামাই হিসাবে বিশ্বাস করতে চাইতো না, ভাবতো- আমি টুরিষ্টগাইড। আর পরিচিতিরা কেউ কেউ ভাবতো- আমি ধর্মান্তরিত হয়ে গেছি, খৃষ্টান হয়ে বিদেশী বিবাহ করেছি।আবার কেউ ভাবতো- আমি একজন চুড়ান্ত লোভি মানুষ। ঠোঁটকাটা বন্ধুরা বলেই ফেলতো- জাপানি তো বাগাইলা, জাপানে যাবা করে? ভাবখানা ছিল এমন – বিদেশী বিবাহ মানেই যেন দেশান্তরি। বিদেশী বিবাহ মানেই খৃষ্টান্তর। লোকজনকে তো বুঝিয়ে কুল-কিনারা শেষ করতে পারতাম না- জাপান খৃষ্টানদের দেশ না, বুদিষ্ট-সিন্তদের দেশ।

বউ আসার পর কিছুদিন আনন্দে কাটলো দুইমাস যাওয়র পরও জাপানি কোন টাকা দেয় না, টাকার কথাও বলে না। শরম কেটে যাওয়র পর বললাম,
– কত টাকা এনেছেন?
– কিসের টাকা?
– সংসার চালানো টাকা আনেন নাই?
– না, আপনার ক‍্যামেরা, ল‍্যাপটপ, আত্নীয়দের উপহার, বিমানের টিকেট আর কিছু বই-পত্র কিনেতেই সব শেষ হয়ে গেছে।
বিস্মিত হয়ে বললাম
– বলেন কি, তাই নাকি? তাহলে এখন কিভাবে সংসার চলাবেন? আপনি জাপানি মানুষ, আমার অল্প বেতনে কি আপনাকে লালন-পালন করতে পাররো? কম দামের বাসায় তো থাকা যাবে না, সিকিওরিটি ব‍্যাপার আছে না?

বউ অবাক করে বলে,
– কম দামের বাসায় আমি থাকতে পারবো , পারবেন না কেন? বাংলাদেশের সবাই থাকতে পারলে আপনিও পারবেন।
– আপনি তো বাঙালি বউ না। জাপানি, যেখানে সেখানে কি রাখা যাবে?
– আরে না, কেউ জিজ্ঞালে বলবো, আমি জাপানি না, চাকমা। দেখতে তো একই রকম।
– সবই বুঝলাম, তাহলে একটা বছর সেপারেট থেকে লাভটা কি হইলো?
– সারাজীবন টিকবেন কিনা একটু টেষ্ট করলাম। জাপানে যাওয়ার লোভে, ইয়েন পাওয়া লোভে বিয়ে করেছেন কিনা, টেষ্ট করলাম
– কি বুঝলেন?
– আপনি পাশ, ফাস্ট ক্লাস ফাষ্ট! লোভ নাই।
এ বলে কাছে আসে, রুমান্টিক হাসিতে হাসে।

যেমন কথা তেমন কাজ। ঠিক তাই হলো দশ বছর জাপানি – বাঙালি হয়ে, চাকমা নারীদের লুঙ্গি পড়ে ঢাকায় কাটিয়ে দিল।
আমিও মন থেকে মুছে ফেলেছিলাম – আমার বউ জাপানি। বাঙালি যুগলদের মত -দু’জনে বাংলা কথা বলতাম, হাত দিয়ে ঝাল ভাত খেতাম। যখন তখন মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারে যাওয়ার ছলে রিক্সপ্রেম করতাম। বাজারের সব দোকানদার আমাদের চিনতো। রিক্সা থেকে নামার সাথে সাথে সবজিওয়ালা, মুরগীওয়ালা ডাকাডাকি শুরু করে দিতে।
– মামা মামাী আর আমার এখান থেকে জিনিষ নিবেন।

এভাবেই শুরু হয়েছিল আমার জীবনোপন‍্যাসের নতুন পর্ব।

সাদো, জাপান
১৮ই আগষ্ঠ, ২০২২

হৃদয় লুটেরা তলস্টয়

হৃদয় লুটেরা তলস্টয়

যে শিল্প ও সাহিত্য কুসংস্কারচ্ছন্ন নির্দেশনাকে সঞ্চারিত করে; যে শিল্প পতিত রিপু কামোদ্রেককারী, মিথ্যা, অহংকার অভিমানে ভরপুর; জাতীয় বীরদের উচ্ছাসিত প্রশংসামূলক জয়গান করে মানুষকে সংকীর্ণ জাতিবোধে আবদ্ধ করে দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে; সর্বোপরি এককেন্দ্রিক অন্ধ অনুরাগ প্রতিষ্ঠা করে বিলাসিতায় অনুপ্রাণিত করে- সে শিল্প সহিত্য অসৎ ও ক্ষতিকর। শান্তি নষ্টকারী এমন শিল্প প্রকাশ জনসাধারণ দ্বারা নিন্দিত ও ধিকৃত হবে! শিল্পকে শুধু অস্বাভাবিক চিন্তা ও জীবনচর্চায় অভ্যস্থ এলিটদের দাবী মিটালেই চলবে না, শিল্পকে বৃহৎ শ্রমজীবি জনগোষ্ঠীর দাবী মেটাতে হবে।

শিল্প ও সাহিত্য নিয়ে তলস্টয়ের এ দর্শন আমাকে আন্দোলিত করে, আবেগে ভাসায়, প্রতিদিন নতুন নতুন স্বপ্ন দেখায়। শিল্প রাজ্যের মহারাজা লিও তলস্টয় আমার প্রেরণা!

তলস্টয় তার ভাবনাগুলো শুধু তার সাহিত্যে সীমাবন্ধ রাখেন নি, পুরোটাই প্রতিফলন করে ছিলেন নিজের জীবন চর্চায়। ইউরোপের বিবেক, পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ট উপন্যাসিক ও নীতিবাদি দার্শনিক তলস্টয় বিশ্বাস করতেন,

– শিল্পের বদনাম ও সীমাবন্ধতা শিল্পের নয়, শিল্পীর। শিল্পই তো শিল্পীর পরিচয়। শিল্প ও শিল্পীর জীবন যদি এক না হয়, তবে শিল্পীর জীবন ও সৃষ্টি দুটোই অস্বার্থক হয়ে যায়। যে শিল্পী, নিজের শিল্পাদার্শে- নিজের জীবনকে সাজায় না, সাজাতে পারে না, তা সাধারণ মানুষের জন্য অচল, ব্যর্থ!

তলস্টয় সাহিত্য ও জীবনকে অভিন্ন করে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন। যা পৃথিবীর খুব কম শিল্পী-সাহিত্যিকের জীবনেই দেখা যায়। এই কারনেই তলস্টয় শিল্প রাজ্যের মহারাজা।

জমিদার পুত্র লিও তলস্টয় জন্মে ছিলেন ১৮২৮ সালের ২৮ শে আগষ্টে, রাশিয়ার তুলা প্রদেশে। তিনি ছিলেন জমিদার নিকোলাচ ইলিচ ও প্রিন্সেস মেরীর ভোলকোন সকির চতুর্থ সন্তান। রাশিয়ায় দাসপ্রথা বিদায়লগ্নে, আভিজাত্যের দুর্ভেদ্য দূর্গ ও মেহনতি মানুষের নিদারুন দুর্দশা মুখোমুখি দেখে দেখে বড় হয়েছিলেন। ছেলেবেলা থেকেই তলস্টয় পাঠ্য পুস্তকের বাহিরে বিশাল জ্ঞানরাজ্যে বিচরণ করতে ভালোবাসতেন। দিনের বেশীর ভাগ সময় কাটাতেন সমাজের সাধারণ মানুষের সঙ্গে। যা ছিল, নিজের অজান্তেই মহান লেখক ও মহামনিষী হওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি।

১৮৪৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একগুয়েমী পাঠে বীতশ্রদ্ধ হয়ে ফিরে এসেছিলেন জন্মস্থান ইয়াসনায়া পোলিয়ানা গ্রামে। শুরু করেছিলেন খামারের কাজকর্ম ও ভূমিদাসদের দেখাশোনা। কিন্ত মানুষের উপর মানুষের প্রভূত্ব জাহির তিনি বেশী দিন করেন নি! ফিরে আসলেন মস্কোতে। অভিজাত বন্ধুদের সঙ্গ দোষে জড়িয়ে পড়েছিলেন উশৃঙ্খল ও অনিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনে। তলস্টয় শান্ত-সুবোধ স্বভারে ছিলেন না, প্রচুর দেনা করেছিলেন, বিষয় সম্পত্তি নষ্ট করে ফ‚র্তি করেছিলেন। এমন উল্লাসময় জীবনযাপনের ক্ষণিক আনন্দে, প্রতিক্ষণ আতœদহনে ভোগতেন। আতœ সমালোচনা করে প্রতিদিন ডাইরী লিখতেন। এই ডাইরী লেখা থেকেই ১৮৪৭ সালে শুরু হয় তলস্টয়ে সাহিত্য যাত্রা।

ভোগের স্রোতে কচুরীপানার মত ভাসতে ভাসতে যখন তলস্টয় কোন কুলকিনারা পাচ্ছিলেন না, তখন বুঝেছিলেন- এ পথ আসল পথ নয়। এই গভীর ভাবনায় ১৮৫১ সালে মস্কোর জীবনের ইতি টেনে ককেসাসে চলে আসলেন। স্বোচ্ছাসেবক হিসাবে যোগ দিলেন সেনাবাহিনীতে। সঙ্গে সঙ্গে চালিয়ে যেতে লাগলেন সাহিত্য সাধনা।

১৯৫২ সালে নিজের ছেলেবেলার কাহিনি দিয়ে প্রকাশ করলেন প্রথম উপন্যাস ’শৈশব’। প্রথা বিরোধী এ উপন্যাসটি প্রকাশের সাথে সাথে চারদিকে সাড়া জাগিয়েছিল। এ উপন্যাসে বিশ্লেষন বিস্তৃত না হলেও, অন্তরঙ্গ অন্তদৃষ্টির অভিব্যক্তি ছিল। নবাগত তলস্টয়ের সৃজনশীল এ প্রকাশকে তৎকালীন অনেক বিখ্যাত লেখক প্রশংসা করেছিলেন।

সৈনিক জীবনের কর্তব্যপরায়নতা ও অসীম সাহসীকতার জন্য ১৮৫৪ সালে কমিশন পেয়ে ছিলেন। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে অসহায় সৈনিকদের রক্তপাত, ধ্বংসের নগ্নতা, মিথ্যা দাম্ভিকতা তাকে আহত করতো। একসময় শান্তির কামনায় অস্থির হয়ে উঠেন। সৈনিক জীবনের চতুর্থ বছরে, ১৮৫৭ সালে স্বেচ্ছায় অবসর নিলেন। ১৮৬০ সালে শুরু করেছিলেন বিশ্বভ্রমন। বিশ্ব বৈচিত্র্যতা দেখে া আরো ভাবুক হয়ে উঠেছিলেন। পশ্চিমা বাস্তববাদীতা, ঐশ্বর্যময়তা ও অহংঙ্কারে ব্যথিত হয়ে- শুরু করছিলেন অন্যরকমের আধ্যাতিœকতা, যা কেবল মহামানবদের জীবনেই দেখা যায়।

নানান দেশ ঘুরে প্রকৃতির সঙ্গে আতœীয়তা গড়ার ব্যাকুলতা বোধ করছিলেন। অবশেষে কুলশতামুক্ত জীবনযাপনের জন্য আবার নিজের সবুজঘেরা গ্রামে চলে আসলেন। শুরু করলেন গ্রামের সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে স্থায়ী বাস! । লাভ করলেন জমিদার ও ভুমিদাসদের সাথে বিরোধ মিটানোর নব্যসৃষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট পদ। ভালোবেসে বিয়ে করলেন নিজের চেয়ে ষোলবছরে ছোট সোফিয়াকে।

দাম্পত্য জীবনের প্রথম দিকে তলস্টয় প্রচন্ড সুখী ছিলেন । এ সময় তার পারিবারিক দর্শন ছিল, ’মানুষকে এমনভাবে বাঁচতে হবে, যাতে সে নিজের ও স্ত্রীর প্রতি বেশী কর্তব্য পালন করতে পারে।’ চৌদ্দ সন্তানের জনক তলস্টয় স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি প্রচন্ড অনুরাগী ছিলেন। তার এ জীবনদর্শনের অভিব্যক্তি ঘটেছে বিবাহিত জীবনের পরে লেখা কয়েকটি উপন্যাসে। জীবনের দুপুর ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জমি ও আভিজাত্যে নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহে জড়িয়ে পরেন। সংসার জীবনে প্রচন্ড সুখী থেকে প্রচন্ড অসুখী হয়ে যান ।

তলস্টয় জমির মালিকানাতে বিশ্বাস করতেন না। তিনি মনে করতেন ’বায়ূ ও পানি’র মত, ’জমি ও মাটি’ প্রকৃতিক সম্পদ। বাতাস ও জলের মালিক যেমন মানুষ হতে পারে না, জমির মালিকও মানুষ হতে পারে না। মাটি, পানি ও জমিতে সবার সমান অধিকার আছে। এই প্রাকৃতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেই, শয়তান তার অনুসারীদের দ্বারা অধর্ম ও অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। মহাপাপে ভাসাচ্ছে সারা দুনিয়ার মানুষকে। জমি সংক্রান্ত এই দর্শনের পরিচয় তার অনেক লেখাতে পাওয়া যায়। ’পুনরুন্থান’ উপন্যাসে বিষয়টি স্পষ্ট।

তলস্টয় তার বিশাল জমিজমা ট্রাষ্ট করে দিতে চেয়েছিলেন বলে, স্ত্রী সোফিয়ার সঙ্গে ঘটা বিষাধময় বৈরীতা জীবনের শেষদিন পর্যন্ত কষ্ট দিয়েছে। স্ত্রী সোফিয়া ছিলেন বিলাসী, সম্পদ লোভী! তলস্টয় ছিলেন নীতিবাদি, যুক্তিবাদী, জমির মালিকানায় অবিশ্বাসী।

জীবনের শেষের দিকে তলস্টয়ে সঙ্গে স্ত্রী সঙ্গে সম্পর্ক কত করুণ ছিল, তার প্রমান পাওয়া যায় ১৮৮৪ সালে বোনের কাছে লেখা স্ত্রী সোফিয়ার এক চিঠিতে- একপাল ছেলেমেয়ে জন্ম দিয়ে, সে সুখ ও পরিবারের প্রতি কর্তব্য কোনটাই অনুভব করতে পারেনি! আমার প্রতি তার উৎসাহ ক্রমেই কমছে। আমি অপমান বোধ করছি। আমরা কখনো তর্কে লিপ্ত হই না। কেউ কারো কাছে অনুভূতি প্রকাশ করি না। সন্তানসহ এ বিরাট সংসার, এবং আমার গর্ভাবস্থার কারনে, আমি সত্যিই রোগ বা দূঘটনা কামনা করছি! যা আমাকে শান্তি দিবে। এ জীবন ছেড়ে চলে যেতে সহযোগীতা করবে।…

স্ত্রীর নিত্য অভিযোগ নিয়ে তলস্টয় তার ডাইরীতে লিখেছেন- কে সন্তানদের দেখাশোনা করবে? দয়া ও আস্থাহীন, দূর্বল ও অস্থির চিত্তের ঐ নারী? যে কোন কারণ ছাড়াই নিজেকে অবসাদ গ্রস্থ করে তুলেছে! সে নিজেও ভুগছে, আমাকেও ভুগাচ্ছে। আমি দেখতে পাচ্ছি, ছেলেমেয়েরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমি প্রত্যক্ষ ভূমিকা না রেখে কি ভুল করেছি? আমি ভালো কিছুর জন্য প্রার্থনা করছি, কিন্তু বুঝতে পারছি আমি অসহায়!….

কল্পনাপ্রসূত অলংকারে সজ্জিত দুর্বোধ্য সাহিত্য রচনার পরিবর্তে- সাবলিল, বাস্তবধর্মী, অভিজ্ঞতালব্দ বিষয় নিয়ে প্রাণবন্ত শিল্প সৃষ্টিতে পারদর্শী ছিলেন তলস্টয়। তিনি রচনায় ব্যক্তিক ছাপ রেখে চরিত্র রুপায়ন করতেন। ভাবতেন প্রতিটি ঘটনা যেন নিজের সামনে ঘটছে। প্রতিটি সংলাপ যেন তার অন্তর থেকে বের হচ্ছে। এককথায় সাহিত্য চর্চাকে তিনি আরাধনা মনে করতেন। আলনিন, নিকলোডোভ, ইউজিন তার সৃষ্ট চরিত্র- ব্যক্তি তলস্টয় বলে পরিচিত।

তলস্টয়ের ’কসাক’ গল্পগুচ্ছ (১৮৫৪)- ভালমন্দের বোধহীন, যুক্তিবাদ ও নীতিবাদের উর্ধে, প্রকৃতি প্রভাবিত জীবনের জয়গান। অভিজাতদের ব্যর্থতা, হঠাৎ পক্ষ বদল, আদর্র্শহীনতা এবং বিবেকহীনতার প্রতি ব্যঙ্গ করে তিনি লিখেছিলেন, ’দুই হুসার’ (১৮৫৬), লুসিনি (১৮৫৭), তিনটি মৃত্যু (১৮৫৯) ইত্যাদি চমকপ্রদ ছোটগল্প। সৈনিক জীবনের অভিজ্ঞতায় লিখেছিলেন সিভাসটোপল (১৮৫৫) গল্পমালা। বিশ্লেষন করেছিলেন- সামরিক বাহিনীর মানুষদের ভয়, সাহসিকতা, উন্নাসিকতা ও প্রবৃত্তি। বিষয়টি সবচেয়ে সফল ব্যখ্যা করেছিলেন তার বিশ্বখ্যত সৃষ্টি ’ওয়ার এন্ড পিস’ (১৮৬০-৬৬) উপন্যাসে।

১৮৮০ সালের দিকে ’ওয়ার এন্ড পিস’ এবং ’আনা কারানিনা’ প্রকাশিত হবার পর থেকে তলস্টয় আধ্যাতিœকতা দিকে ঝুঁকে পড়েন। যা তার সাহিত্যকর্ম, দর্শন, সমাজ ও চেতনাতেও আধ্যাতিœকতা প্রাধান্য পেতে থাকে। তিনি প্রচলিত অন্ধ-গোড়া খ্রীষ্টবাদকে পাশ কেটে, সন্তের অবস্থানে দাঁড়িয়ে কল্পনা করতেন এক অপরুপ স্বপ্নরাজ্যের। জয়গান করতেন নৈতিকতা আর মানবতাবাদের। তার ধার্মিক আচরণে আনন্দিত হয়ে চার্চ তাকে সম্বর্ধনা দিলে, তিনি অন্ধত্বের বিরুদ্ধে কথা বলেন,
– আমি প্রচলিত অন্ধকারছন্ন খৃষ্টবাদে বিশ্বাসী নই! আমি কোন গীর্জার অর্ন্তভূক্ত নই!….

ধর্মযাজকদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন বলে, তাকে খ্রিস্ট ধর্ম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এসময় তিনি বলেছিলেন, যারা স্রষ্টা ও যীশুকে নিয়ে ব্যবসা করে তাদের চেয়ে আমি ভালো খ্রিস্টান । ধর্ম থেকে কুসংস্কার এবং অন্ধ-গোড়ামীকে বাদ দিলে যে বিশুদ্ধ মানবিকতা থাকে, তার প্রতি তলস্টয়ের পূর্ণ সমর্থন ছিল। এ নিয়ে তিনি নিজস্ব মতবাদ ’তলস্টয়িজম’ গড়ে তুলেছিলেন। যার সারমর্ম –

বিশুদ্ধ ধর্ম মানব কেন্দ্রিক। স্রষ্টা ও স্রষ্টার রাজ্যত্ব মানুষের মাঝেই নিহিত। মানুষের লক্ষ্য সুখ অর্জন করা। যা সৎকর্ম করে, লোভ-লালসা-হিংসা-ক্রোধ রিপু ত্যাগ করে পাওয়া সম্ভব। শুধুমাত্র যুদ্ধ নয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের সাহায্যে মানুষকে কোন কাজে বাধ্য করানোও অপরাধ, পাপ! সমাজের বিত্তশালীরা নিজের স্বার্থে দুষিত ও কৃত্রিম সভ্যতা গড়ে তুলছে, মিথ্যা মুল্যবোধের সৃষ্টি করছে- যা থেকে মুক্তি আবশ্যক।

তলস্টয় শুধু মানুষকে মানুষের প্রতি হিংসা থেকে নিবৃত হবার কথা বলেননি। জীবহত্যা ও মাদকদ্রব্য বর্জনের কথাও বলেছেন। কারণ এসব মানুষের মানবীয় গুণাবলীকে কুলষিত করে।

স¦ার্থক সাহিত্যিকের পাশাপাশি তলস্টয় সমাজ সংস্কারক ছিলেন। ছিলেন খৃষ্ট ধর্মের মহৎ ব্যাখ্যাকারক। সাহিত্যিক ও দার্শনিক হিসাবে বিশ্বখ্যত হলেও সংগীত ও চিত্রকলাতেও পারদর্শী ছিলেন। রচনা করেছেন গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও নাটক। তলস্টয় শিল্পকে শুধু মুষ্টিমেয় শিক্ষিতজন ও অভিজাত সম্প্রদায়ের মাঝে সীমাবন্ধ রাখতে চাননি। ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে। রাজদরবারের রথি-মহারথি থেকে শুরু করে অতি সাধারন মানুষ সবার সাথে তিনি মিশতে পারতেন। কে কী বলবে তার ভয় না করে ন্যায্য কথা সবসময়ই বলতেন। সমাজের উন্নয়নের জন্য বাস্তবধর্মী প্রস্তাব রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন মহাতœাগান্ধীর মত জন রাস্কিনের অনুসারি। প্রচলিত ধর্মের পাশাপাশি প্রচলিত সাহিত্যের প্রতিও তার আস্থা ছিল না। তিনি বলেছিলেন,

– শিল্প সাহিত্যের স্বার্থকতা শিল্পীর অন্তরে উপলদ্ধ অনুভূতির সংক্রামনে। হৃদয় থেকে হৃদয়ে সঞ্চারণে। যে শিল্প যত বেশী সংক্রামন করতে পারে, সে শিল্প ততবেশী স্বার্থক, জনপ্রিয়। কারণ শিল্পীর সৎ অনুভূতি মানুষের অন্তরকে সংক্রামন করবেই। অনুভূতি উচ্চস্তুরের হলে, মানবপ্রেম ও করুণা নির্ভর হলে, তবে তা উচ্চমান সম্পন্ন হতে বাধ্য।

তলস্টয়ের শিক্ষা দর্শন উচ্চ আদর্শবাদের কথা হলেও – নিজ দেশ রাশিয়ায় এর প্রভাব নগণ্য। তবে তার মতবাদ স্বদেশের সীমা পেরিয়ে- চীন, ভারতবর্ষ, ইউরোপ ও আমেরিকাতে ছড়িয়ে পড়েছিল। জীবনের শেষ পনর-বিশ বছর, তিনি ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ট বরনীয় মানুষ হিসাবে গণ্য হতেন। এ সময় তার জনপ্রিয়তা এত তুঙ্গে উঠেছিল যে- সারা দুনিয়া থেকে মানুষ তার জন্মস্থান ’ইয়াসনায়া পোলিয়ানা’ দেখতে যেত। তার গ্রামটি তীর্থে পরিনত হয়েছিল।

উল্লেখ্য ১৯০২ থেকে ১৯০৬ পর্যন্ত প্রতি বছরই তলস্টয় সাহিত্যে নোবেল; এবং ১৯০১, ১৯০২ এবং ১৯১০ শান্তিতে নোবেলের জন্য মনোনীত হয়েও- রহস্যজনক কারণে পুরুস্কার পাননি। তার নোবেল না পাওয়ার ঘটনাটি, মহাতœ গান্ধীর নোবেল না পাওয়ার মতোই বিতর্কের কারণ আজো।

তলস্টয় খৃষ্টধর্মের অবাদ বিচরনকে অতিরিক্ত বারাবারি বলে সমালোচনা করতেন। প্রথম থেকেই চার্চ সমর্থিত রুশ শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈরীতা ছিল। তবে তলস্টয়ের অতি জনপ্রিয়তার কারণে, শাসকরা তাকে কোন শাস্তি দিতে সাহস পেতেন না। হিংসার এড়ানোর জন্য, রক্ষনশীলতা ও রোমানফ বংশ বিরোধী কিছু বক্তব্য ও সাহিত্য দেশের বাহির থেকে প্রকাশ করেছিলেন। এমনকি তার বিখ্যাত রচনা ’শিল্প কি’ গ্রন্থটিও। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বৈরীতার কারণে, তলস্টয়ের কোন শাস্তি না হলেও- তার মতবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে সৈনিক বিভাগে কাজ না করার কারণে অনেক কে জনবিচ্ছিন্ন সাইবেরিয়াতে নির্বাসন দেয়া হয়েছিল।

তলস্টয় ধর্মের কথা বললেও, ধর্মের নামে অধর্ম চর্চাকে সচেতন ভাবে বর্জন করেছেন। ফলে তার সাহিত্য হয়ে উঠেছিল সুন্দর, গভীর, মানবিক, অপূর্ব ও স্বার্থক। তার এই গুণের কারনেই তিনি আজ মহামতি, মনিষী ।

১৮৮৪ সালের পরে প্রতিটি রচনায় তলস্টয়ের এ চেতনা প্রতিটি সাহিত্যকর্মে সফলভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। সাহিত্য জীবনের শেষ পর্যায়ে তলস্টয় সমাজ সম্পর্কে, মানুষ সম্পর্কে, নিজের সম্পর্কে অর্জিত অভিজ্ঞতার রুপায়নে আরো বেশী সর্তক, আরো বেশী সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছিলেন। যার প্রমান পাওয়া যায় ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত ’ক্রেয়োটজার সোনাটা’, ও মৃত্যুর পর ১৯১১ সালে প্রকাশিত ’ইবলিস’ গল্পে। তিনি ’ইবলিস’ গল্পে নিজের জীবনে মধ্যবয়সে ঘটা যৌন অভিজ্ঞতা সাহসের সাথে বলেছেন। ’অন্ধকারের শক্তি’ (১৮৮৯) ও ’নির্বানের ফল’ নাটকে তিনি কৃষক জীবনের বাস্তবচিত্র ও সামাজিক উন্মত্তকে ব্যঙ্গ করেছেন।

কর্মোদ্যম তলস্টয়ের শেষ জীবনে একা ও নিসঙ্গে কেটেছে। ছোট মেয়ে আলেকজেন্দ্রা ছাড়া সংসারের কেউ তার আদর্শ জীবন সমর্থন করে নি। তিনি যখন সম্পতি সমাজকল্যানে ট্রাষ্ট করে দিতে চেয়েছিলেন, স্ত্রী সোফিয়ার নেতৃত্বে মানসিক অত্যাচার অসহনী ভাবে বেড়ে গিয়েছিল। অবশেষে তিনি স্ত্রী’র কাছে আতœসমর্পন করেছিলেন। সাহিত্যের কপিরাইট সহ সমস্ত সম্পতি স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। বসবাস শুরু করেছিলেন এক নির্জন খামার বাড়িতে। যেখানে তিনি সাধারণ কৃষকের পোষাক পড়তেন, নিরামিষ খেতেন, কায়িক পরিশ্রম করতেন। এ সময় তিনি হয়ে উঠেন পুরোপুরি অহিংসবাদী। গড়ে তুলেছিলেন – মহাতœগান্ধীর সঙ্গে পত্রযোগাযোগ। এই যোগাযোগ এতই গভীর ছিল যে, গান্ধীজী তার অফ্রিকা আশ্রমের নাম দিয়েছিলেন- ’ তলস্টয় ফার্ম’।

সংসার ত্যাগ করে তলস্টয়ের একা খামার বাড়িতে জীবনযাপন স্ত্রী সোফিয়া সহজভাবে নেননি। এসময় তার আচরণ রুঢ় থেকে রুঢ়তর হয়েছিল। অনুসারি ’কায়াজটকভ’এর সঙ্গে তলস্টয়ের দ্ব›দ্ব শুরু হলে, তিনি প্রতিকূল পরিবেশ থেকে মুক্তির জন্য ব্যকুল হয়ে উঠছিলেন। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন- নিরুদ্দেশে গৃহত্যাগের।

১৯১০ সালের ২৮ শে অক্টোবর রাত্রিতে সারা বাড়ি যখন আরাম-আয়েশ, ভোগ-বিলাস ও ঐশ্বর্যের ঠমকে মত্ত, তখন নীড়হারা আহত পাখীর মত উ™£ান্ত হয়ে, অজানা পথে পা রাখলেন। তুষার পড়া ঠান্ডায় পথে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। শয্যাশায়ী হলেন ষ্টেশন মাষ্টারের এক ঘরে। চারদিকে অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়লো, সুচিকিৎসার ব্যবস্থা হলো, কিন্ত শেষ রক্ষা হলো না। ব্যথিত হৃদয় নিয়ে ১৯১০ সালের ৭ই নম্ভেবরে, ৮২ বছর বয়সে চিরবিদায় নিলেন – শিল্পরাজ্যের মহারাজা , বিশ্ব সাহিত্যের মধ্যমণি লিও তলস্টয়।

খৃষ্টধর্ম থেকে বিতারিত, বিপুল জনপ্রিয় তলস্টয়ের সৎকারের জন্য শোক অনুষ্ঠানে পাদ্রীরা ভিড় করেছিল, কিন্তু জনগন কাউকেই তার লাশের কাছে ঘেঁষতে দেয়নি! শেষে দেশ ও বিদেশের হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ পরম ভালোবাসায় শবযাত্রায় শামিল হয়ে, নিজ জন্মস্থানে ইয়া¯øায়া পলিয়ানা গ্রামে, কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়াই সমাহিত করে।

তথ্য সূত্র:
১) শিল্পের সরূপ/ তলস্টয় – অনুবাদ দ্বিজেন্দ্রলাল নাথ। ২) ভলতেয়ার-ফুবেয়ার-তলস্টয়: ত্রয়ী উপন্যাস ও যুগমানস/ হোসেন উদ্দিন হোসেন, বাংলা একাডেমী। ৩) বিশ্বের শ্রেষ্ট গল্প : দেব সাহিত্য কুটির। ৪) তলস্টয় ও দস্তয়ভস্কি : পারিবারিক জীবনের তুলনামূলক চিত্র: আসিফ রশীদ। ৫) লেভ তলস্টয়: সাধ-জন্মশতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি, মুক্তধারা। ৬) দ্যা ডিভেল: অনুবাদ ’শয়তান’, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র।

Newmedia leadership and youth participation in Bangladesh

Countrywide 459 blasts in 63 districts within 30 minutes at August 17, 2005 have made a black scene in Bangladesh history. With this terrorism was involved mostly marginalized grassroots youth, are innocent believers and have no clear concept about the modern world, culture, faith and life style. General finding, this incidence is not cause but result. It happened, because Bangladesh could not educate and train these youth generation as universal minded that can encounter fanaticism, hateism and ignorance. The grassroots reality is that majority of rural people don’t have minimum access to basic information; the youth and children are growing without knowing and live high risk of conflicts, HIV and degradation of human values with extreme poverty and insecurity.

“Our aim is to build an ICT-driven nation comprising a knowledge-based society by the year 2006.” was the national commitment given by Bangladesh prime minister in December 11, 2003 shown a vision to nation particularly to youth. But the dateline has been passed; still now the nation is fighting with poverty, corruption and reaching to minimum standard of MDGs. Majority rural poor is not familiar with even newmedia terminology and development mottos. “Education for All”, “Health for All”, “Gender Equality” ” Knowledge Based Information Socitey”, ” Unlocking the Potential” etc development” slogans yet could not overcome the formation level.

But since this decade the situation, particularly in urban and semi-urban areas has been changing tremendously by the emerging of mobile phone technology and unprecedented youth participation as user and entrepreneur. Bangladeshi youth now highly motivated and widely using the mobile phone. Amazing stats 70% mobile phone users are youth whom most favorites are innovative use of cell technology. The most important result is the country now connected and active in communication. However village and town now connected over GPRS and WiFi Internet service provided by the cell phone companies. The young girls are also empowered and have pride to overcome negative forces, dowry, domestic violence, acid attack, gender discrimination etc. Vast numbers of grassroots women particularly young girls are conscious and confidently running business as well. The unprivileged rural mothers now send children school and see vision for quality life.

This positive result happens by the continuous efforts of nationwide large number of NGOs, particularly by the group meeting and micro-credit program of development organizations.

Nowadays in Bangladesh for grassroots development and awareness ICT that is mobile technology is working as action media. The situation could be more active if the multinational telecommunication companies’ Internet connection and device could be accessible in price for rural poor. In this case if the Government can also take community based ICT initiatives as did in 80s’decades’ to promote radio and TV through local government institutions.

History and national challenges

History:

The history of Internet in Bangladesh is young. In April 1994 off-line e-mail system of Bangladesh was operated from Netherlands as “DripTAP” brand and the first ISP was set up in June 1996. The internet technology could not expand as VSAT licensed was blocked by BTTB until 2000.

Within low bandwidth and high price also Internet and mobile telecommunication are getting popularity since 2000. But the access is limited up to certain level in urban areas only. Majority of the rural people don’t have access with this powerful media.

Presently Bangladesh has more than 100 ISPs. Mostly are based in Dhaka and divisional city , but gradually some are spreading to other cities/towns. However all ICT service providers now are focusing predominantly on the city area, not interested to the village, even though 80% population of the country lives in village. All are reluctant with the prejudice that village is not a profitable region, even though there is a business success story of Rural Internet’ program of Grameen Phone. However the country now connected with Global Information System by Submarine Cable connection.

National challenges:

As like as other non-English development nations, in Bangladesh also language forms the biggest barrier to computer and internet literacy. However majority rural peoples still now don’t have access to education, information and citizen rights to democratic participation in development process.

Yet this technology and English language both exist. The local & new global cultural practices are struggling. This is the new media reality in Bangladesh.

Low computer penetration, slow and expensive Internet access, lack of Bangla interface, prohibition to online payment system, cyber security and lack of cyber laws are big challenges of the nation. Within these barriers also, the use of ICT is increasing in the human rights and development arenas of Bangladesh, especially by the youth leaders, journalists and media activists. The global information system is affecting positively towards behavioural change and practices.

The ownership and digital divide

Digital divide between urban and rural, poor and rich is still now sharp in Bangladesh. The Telephone density in cities is 0.5 lines per 100 populations where as the lowest that of the world is 0.05 per 100 people rural Bangladesh. Even though Grameen Phone, Banglalink, Aktel, Warid etc multinational telecommunication companies are providing huge connectivity that exceed four cores but the most users are city dwellers.

It is clear that only the wealthy and city dwellers have wide and open access to this technology. Here, a computer costs more than one year income of a farmer and 6 months of one middle class salary man.

Compare to the percentage of global internet users, Bangladesh is having very few percentage. In total population less than 4% people has access the internet. But the positive things the percentage is now rapidly growing up. In city area most of all educated youth are using internet.

However the ownership of the modern technology should be to the majority people. But in Bangladesh not yet established this motif. Rural people don’t have access, at the same time don’t have basic knowledge about the power of newmedia. Moreover the general peoples are not attracted to this media as there is huge lacking of local content. Majority peoples can not understand the importance and trends of internet.

The situation could change dramatically if Bangladesh could link the internet with the commerce. The main problem is online transaction is prohibition , however don’t have proper security and laws.

In this situation Bangladesh has declared National Policy on ICT with the vision to comprise the knowledge society by the year 2006. In view of this, a country-wide ICT infrastructure will be developed to ensure access to information by every citizen to facilitate empowerment of people and enhance democratic values and norms for sustainable economic development by using the infrastructure for human resources development, governance, e-commerce, banking and public services.

But in this year 2008 also villages do not have sufficient connection with the outside world. Rural residents do not have access to news about the country, government, education, neighboring markets, or even about job opportunities.

Newmedia leadership and national commitments

The most crucial barrier for Bangladesh in newmedia leadership development are the lack of adequate ICT knowledge and strategy both in Government and NGOs level. It comes from the lack of “visions for change” and “expertise of senior citizens” who are policy makers and top of the society. The gap between the national vision and reality is getting increased. This gap can be filled by giving opportunity to youth to be ICT leader and policy makers.

However Bangladesh could prepare the excellent ground as it has huge number of youth who knows functional English and has college or university degrees but is unable to get job in city areas. These jobless youth can play prime role as a social entrepreneurs, local content producers, publishers as well as new media promoter and effective users of digital applications.

It is proved; the future of ICT promotions, entrepreneurship by youth is bright in Bangladesh. Since 2001 the use of ICT tools has been increased dramatically in Dhaka, major districts and divisional cities. In divisional cities almost 10,000 cyber caf has been established, mobile phone users has also increased into 30 times, 70% house has satellite cable connections. Most significant information is 75% mobile phone users and 95% cyber cafs’ owners are young. More than 90% cyber businesses are running successfully by young business men.

According to National Policy, “Bangladesh is committed to provide the Internet facility will be extended to all the district headquarters and subsequently to its adjacent area up to Upzila levels. Internet will be provided to the educational institutions and libraries. To ensure public access to information, Cyber Kiosks will be set up in all Post offices, Union complex and Upzila complex. ” but the situation is not going successful way.

Bangladesh now needs Electronic Government. But only 10% of government ministries and agencies have websites, most of websites don’t update regularly. All Government services, information and public resource documents should have accessible for all citizen; but only a few and limited forms are available.

There is a great potentiality if Bangladesh can make a group of youth leaders and professional with social commitment. The young leaders can start the mission of development centering on “Village Cyber Kiosk” and or agro based ICT entrepreneurship. The initiative already has been started. The Grameen Phone, BRAC, MMC, DNet and some other ICT NGOs are now running successfully “Rural Telecenter”. With the vision to establish nationwide 40000 Telecenters by 2011, “Bangladesh Telecenter Network” has been already established.

On December 6, 2007 the Chief Adviser of Bangladesh Government, Dr Fakhruddin Ahmed formally launched Mission 2011 of Bangladesh Telecentre Network (BTN) with the hope to give access to information and knowledge for improving rural poor’s livelihood through the use of modern information and communication technologies. He said ” We need to remove barrier and empower these people by providing them with access to new technologies.”

In this situation, the powerful new media can play most important role to establish Millennium Development Goals and the Knowledge Society by giving the ownership of modern technology and knowledge to the majority. My understanding, the Internet has the sprit of public service. It opens enormous potentiality by exposing the knowledge, information and resources for all. Proper information easily can breakdown all kind boarders and boundaries.

In order to promising newmedia leadership development “University of Liberal Arts Bangladesh ( ULAB)” is giving education on Newmedia, digital production and online journalism. Hope other universities will follow up such time need initiatives.

Newmedia as action media

ICT particularly newmedia has potentiality to serve as a democratising force. It provides public access to information, builds a virtual space for community gathering and grassroots development for repression, propaganda and enforces authoritarian control, particularly for the marginalised community. ICT, specially Internet, used in collaboration with human rights activism, creates virtual alternative tunnels for the free flow of uncensored information within and out of country. Global information systems, Internet as well as ICTs have opened up the golden gate for human rights development in Bangladesh.

The youth entrepreneurship and youth participation can make ICT as action media for human rights and aspects of information society promotion. To establish nationwide Human rights multimedia resource centre’ (can be called InfoCenter or telecenter ) in every village, large number of NGOs network can play an important role.

It is proved that only one responsible website can change the situation dramatically by encouraging, awakening and making people sensitive to participation in development process and or for protecting the violence and human rights abuses. It gives continuous objective education and awareness both to the defenders and offenders. Such type of effective and popular portal or website has not yet been launched in Bangladesh. Hope soon will be appear such type initiative by promising youth leaders.

Because of excessive focus on personal matters and benefits; the extreme individualism, selfishness, corruption, dogmatism, violence (both visible and invisible) are increasing dangerously in Bangladesh. People are becoming separated to separate, divided to divide. This is the time to inform and educate the people about rights and power of participation by grasping the new media opportunities. ICTs, particularly the Internet and multimedia, can play most important role for promotion of human rights and development in Bangladesh.

Youth initiatives and success stories

The most recent national achievement is making database based national voter list with young computer operators. By this initiative the nation has been inspired and had been introduced with compute and modern technology. Again it has been proved if the nation unite, surly Bangladesh will be used the newmedia for its development.

However the youth leading “Shidhulai Swanirvar Sangstha” (www.shidhulai.org) has received award from Bill & Millenda Gates Foundation however recognized by UN as best practices of “education and education”. Xayanit (www.xayanit.com ) wined GKP Youth and ICT Award, 2005 . The UnnayanTV ( www.unnayantv.com ), Bangladesh first online TV has been final listed by the Stockholm Challenge 2008.

However the youth platform Meghbarta, Drishtipat, Banglarights, Somewherein Blog, UnnayanNews, Uttorshuri, Adhunika is running successfully by youth.

Conclusion:

The nation is now fighting against the poverty, corruption and the degradation of human values, however heartrending to establish human rights and democracy. As the country now has been divided based on information and views. By sharing the proper information Bangladesh can overcoming the misunderstandings, and can find the common vision for national prosperity. Misguided grassroots youth could be saved from militancy, corruption, dogmatism as well as from terrorism.

Majority access to basic information and people’s participation are the precondition for democracy, human rights and development. By establishing rural information center, VISP (village internet service provider) and recruiting the young newmedia leaders and professional Bangladesh easily can improve its capacity. However the nation could be prepared for reaching to millennium targets and last mile solutions by giving the ownership of modern information and technology to majority rural poor. Regarding this, the large number of NGOs network and local government organizations can play the prime role, national scenarios will totally change as was happen in 80s’decades’ by Radio and TV promotion through local government institutions.

Note: This paper was presented in the AMIC Annual Conference 2008, Manila, Philippines.

Published in Helium / One World / USA

Bangladeshi Farmers Adapt to Climate Changes

DHAKA, Apr 16 (OneWorld) – Although illiterate Bangladeshi villagers don’t know the climate change lingo, many have shown an awareness of the situation, using local knowledge to innovate and adapt to the natural changes.

Constant fighting with poverty and floods are a common reality of grassroots Bangladesh. Along with development challenges, preparing for and adapting to climate changes has been added to the burden of the rural poor.

The people of Vobodaho and Kashoppur in the Jessore district of southwest Bangladesh are continuously striving to deal with changes to their surroundings. Since 1960, the region’s nature has been affected by aggressive man-made changes, which have led to high salinity levels and arsenic pollution in waterways, and water logging of much of the land.

“Even my forefathers can’t remember flooding on this scale. That’s why we set up home here. If I’d known growing up that there was such a risk of flooding I would never have built a house here.” – Samsur Rahman ShaqBut unusual flooding patterns are now adding tremendous suffering in three parts of the district. Because of water logging, most of the crop land in this rural area is now underwater. Farmers can not cultivate as they normally would.

Samsur Rahman Shaq, one affected farmer, is going forward with incessant efforts. He and his family welcome new farming systems. Dap chas (floating gardens), duck rearing, fishing, and other alternative farming methods are now popular in his area.

Rahman Shaq has become an expert on making floating gardens, and his wife on duck rearing. Rahman Shaq explains his experiences: “In this Chatga village, catastrophic flooding has been happening since 2000. Before, we never faced such serious flood. The first time flood came here, we enjoyed huge catches of fish in flooded water. We never thought the water would be logged here permanently. As the water did not return back, huge water hyacinth started sprouting up in this Kopotakho River.”

Hyacinth covered the whole water surface. Boats could not run and the water became fully useless — even for fishing.

One day the villagers from neighboring Gupalgong showed Rahman Shaq and the others in Chatga how to cultivate on the floating hyacinth dap (bed).

At first we did not believe it was possible. First year we were surprised to see excellent harvesting — particularly different type of vegetables without any pesticide and fertilizer on the floating garden. And the vegetables grown on the dap were tastier than normal vegetables.

“After this experience, floating cultivation becomes popular in this area. Now we don’t have hostility with hyacinth.”

But because Rahman Shaq’s regular crop fields were now all underwater, he didn’t have sufficient income. His wife, Anowara Begam, helped them break through the suffering. She is now rearing ducks confidently with a small investment.

Anowara Begam says: “Our family has been rearing ducks on a large scale since 2003. Samadan NGO (nongovernmental organization) taught us how we could properly rear ducks. They gave us good species of ducklings. Before this flood we had 75 ducks but now [fusion_builder_container hundred_percent=”yes” overflow=”visible”][fusion_builder_row][fusion_builder_column type=”1_1″ background_position=”left top” background_color=”” border_size=”” border_color=”” border_style=”solid” spacing=”yes” background_image=”” background_repeat=”no-repeat” padding=”” margin_top=”0px” margin_bottom=”0px” class=”” id=”” animation_type=”” animation_speed=”0.3″ animation_direction=”left” hide_on_mobile=”no” center_content=”no” min_height=”none”][we] only have 35. Forty ducks were washed away during the flood. Now my husband doesn’t have specific income, but by the income from duck rearing we are now running well our family.”

The story of Rahman Shaq’s family creates inspiration to the villages and relatives whose cropland have become water land. Before 2000 this family was economically solvent. Over the first three years of flooding they became poor to poorer; even their house and assets were washed away. There was no hope. But the floating garden and duck rearing nowadays increases their confidence for sustainability.

How is the climate changing in this part of Bangladesh? Rahman Shaq answers: “[Over the] last ten years the climate has abruptly changed here. Before, we could not understand the changes, but now [we are] facing so many difficulties, [and] many new diseases also.”

While visiting his water logged land by boat, Rahman Shaq explains the climate changes. “Even my forefathers can’t remember flooding on this scale. That’s why we set up home here. If I’d known growing up that there was such a risk of flooding I would never have built a house here. Now half of the year [there’s] nothing [we] can do — we can not cultivate; but before we did three times per year.

Each year the water level is rising, [and the] duration of water logging also is increasing. In 2000, our homes were flooded for 14 days. In 2003 it was a month. I fear this year the flood waters will stay for six months. It is now expected in [the] near future, we may be flooded for [the] whole year.”

In this way the inhabitants on the bank of the Kopotakho River are living with and adapting to climate change. And they are using local knowledge in other ways to prepare for more disruptions.

To protect from storms like Cyclone Sidr, which killed thousands of Bangladeshis in November, house structures have been reinforced with the help of local NGOs. Within limited abilities, rural dwellers are making preparations and adapting spontaneously to face flooding each year. They try to make their homes as water-tight as possible. They put wood for cooking up in the roof or somewhere dry. They store dried foods to eat during floods.

Rahman Shaq’s desire? “If we could make [a] fish farm in logged water, [that] would be [a] good income source.”

*Shahjahan Siraj is an online journalist and multimedia designer. He is founder of Machizo, a Dhaka-based multimedia and development organization. This article was the winning entry in OneWorld’s Citizen Journalism Awards on the topic: “How developing countries are adapting or preparing to adapt to the impacts of global climate change.” The contest was run in conjunction with the citizen journalism Web site Helium.com.

This article was written for One World and published in the April 16, 2008.

[/fusion_builder_column][/fusion_builder_row][/fusion_builder_container]

Culture of unity : The way of new development

`For a long time culture was considered an obstacle to development. Art was a luxury, reserved for the elite. And artists were irrelevant when it came to achieving ambitious development objectives. The priorities were limited to water pumps, dams, food, factories and houses. However, the realisation that culture not only plays a role in development, but is even the foundation for it, is slowly beginning to dawn on people. These days, statements such as ‘Culture is about people and their intellectual, emotional and spiritual existence. Support for culture enables people to define their future and to progress’ appear in policy documents.` I agree with this statement of `Power of Culture`.

In culture language is the most powerful elements. It is not just combination of words and or phonetics. It is the history of a community or nation; resultant of thousand years of experiences, glorious lifestyles, and means of communication as well as the expression of a people’s heart, that precedes the civilization. Bangalis have great experiences on language. In 21 February 1952 Bangali youth Barkat, Rafiq, Shafiq made an unprecedented record in world history by sacrificing their lives for their mother tongue. Facing the reality of `Language Movement` the `Culture of Unity` was cultivated in which consequence is today`s Bangladesh. The reality, with the muscle strength and huge global content in colonial English as well as less practices of small and local language, phasing the struggle of existence. Local values, knowledge and practices can not be developing as its needed. Half of the 6,000 or so languages spoken in the world are under threat. Last three centuries thousand languages passed way at a dramatic increasing pace of English-centered modernization, especially in the Americas and Australia . At the present moment, on average 2 indigenous languages per month are disappearing due to improper record of wisdoms alighted in that language. To inspire and protect the local and aboriginal languages as well as survive with self-pride and identity UNESCO has declared February 21st ( Shahid Dibos ) as International Mother Language Day.

Since last decade a big change happened in Bangladeshi culture; peoples view, life style, development approach, knowledge practice, media presentation, even the use of words has been changed abruptly. Multinational`s monopoly, NGO business, leadership thinking, Bangla cinema, bombing, silence youth, media entrepreneurship as well as westernizing are now in headline. People’s participation, philanthropic approach, alternative thinking, civil voice becomes dull. Art, literature, science and philosophy practices become centralized and limited. However crimes, misuse of public money, political conflict become major national problem. Peace seeker individual life also influence dangerously by entertainment media. Negative values `Meism` (extreme selfishness/ individualism) , Nihilism (is a potent and seductive option of young people who are growing up without proper parental love, and or in broken family ) and fundamentalism growing up silently and riskily. Personal peace ( mind body unity ), family prosperity ( husband-wife unity ) and national harmony ( leaders- people disagreement ) are facing questions, although we all are looking freedom, peace, unity and happiness.

This change is far from local values, needs, knowledge and practices are mostly contaminating by misuse of global culture and free flow of information. I believe, by strengthen the practice of `Cultural of Unity` as like as 1952 with unselfish with public mind, the nation can unite; and can initiative a flow of `New Development` with patriotic spirit.