মৃত্যুৎসব
সুত্রপাত
আকাশ থেকে এক দেবযান আসলো।
হৃদয় তার ভালোবাসায় আবেশিত।
আমাকে আলিঙ্গন করে বললো,
– বন্ধু, অনেক কাজ করছো। তোমার শুদ্ধতার যাত্রা শেষ। এবার চলো শুদ্ধলোকে।
আমার শরীর, মন আর হৃদয় কাঁপছিলো।
ভয়ে নয়, শঙ্কায়
– আমার সাধের সংসারের কি হবে? বললাম,
– হে শুদ্ধদেশের মানুষ, তোমার দেবযানটা একটু থামাও! শেষ দেখা দেখে যাই,
– আমার স্ত্রী পুত্র কন্যার আমাকে নিয়ে তাদের কি অনুভূতি। তারা কি করে, কি বলে,
আমি দেবদূতের পাখার আড়াল থেকে দেখলাম আমার মৃত্যুৎসব!
উৎসব
আমার মৃত্যুৎসব হচ্ছে,
আমার নিস্প্রাণ দেহটি মেঝেতে বহুক্ষন ধরে পড়ে আছে,
আশা পাশের কারো চোখে অশ্রু নেই, নেই কোন সুখের স্মৃতি চিহৃ!
ঠিক আমার সম্পদের মত!
সবাই ডেপ ডেপ করে তাকিয়ে আছে। দেখলে মনেহয়,
– অল্প শোকে কাতর, বেশী সুখে পাথর!
আসলে, আমার লাশে ওরা বিষ ঝরাচ্ছে, দাত কিটিমিটি করছে!
এই তো আমার পুত্র, হারাম খাইনি বলে, সুদ, ঘুষ, আর শোষনের পথে চলেনি বলে,
হারামীর বাচ্চা ডাকছে!”
এই তো আমার কন্যা, মানুষের সঙ্গে মীরজাফরী করিনি বলে;
মেহনতি জনতার সাথে, অপূর্ব আশার সাথে বেইমানি
করিনি বলে – মীরজাফর ডাকছে!
এই তো আমার স্ত্রী, স্বার্থপর হয়নি বলে, কঞ্জুসি করেছি বলে,
দেশের স্বার্থে লাথি মেরে নিজের স্বার্থ হাসিল করিনি বলে,
রাশি রাশি ময়লা কাগজ কামাইনি বলে,
বার বার আমাকে স্বার্থপর ডাকছে!
আমার মৃত্যুৎসব হচ্ছে! আমার মৃত্যুৎসব করছে!
আশে পাশে কারো চোখে অশ্রু নেই,
নেই কোন শোকের স্মৃতিচিহৃ আর সৎকারের ডাকডোল!
তবুও আমার মৃত্যুৎসব হচ্ছে! আমার মৃত্যুসৎসব হচ্ছে!
মুক্তাগাছা
২.১.১৯৯২