১৯৮৭ ও ৯০ সালে তোলা চিকন মিয়ার প্রোট্রেট! ছোট সময় আমি চিকন মিয়া ছিলাম। কম খেতাম। মুখের তৃপ্তি বাড়ানোর জন্য, শরীর মেটাতাজা করার জন্য আব্বা আমাকে নিয়মিত ডিজিপ্রেক্স, হরলিক্স, ভিটামিন-সি ও এটাসেটা খাওয়াতেন । অনেক টেনেটুনে আমার স্বাদ আর দেহের আকারটা একটু বেশী বেড়ে গেছে। তাই আজো সেমি-সুমোর মত হেলেদুলে আমাকে হাটতে হয়।
আব্বা আমাকে এমন দোয়া-দাওয়াই দিয়েছেন, সেই ওভারডোজে এই পৌঢ় বয়সেও মুখে চরম স্বাদ আছে। কোরিয়ান ‘কাঁচা অক্টোপাসের বাচ্চা’ থেকে শুরু করে ‘জাপানি র সাসিমি শামুক’, বাংলাদেশে চরের অতিঝাল শুটকিভর্তা দিয়ে কালাই-রুটি তৃপ্তির সাথে খেতে পারি।
জাপানি সুন্দরী ডাক্তার কইছে, আপনার তৃপ্তি বেশী বেড়ে গেছে। ছোটবেলার মত স্বাদ কমাতে হবে, কম খেতে হবে, আকার কমাতে হবে, নইলে ডাইবেটিসির প্রতাপ থেকে বাঁচা যাবে না। ডাইবেটিসের জ্বালা থেকে বাঁচার জন্য, বেশী খাওয়ার প্রবণতা কমানোর জন্য সুন্দরী ডাক্তার ইনজেকশন দিল।
বলেছে – যতদিন বাড়তি স্বাদ না কমে, ততদিন প্রতি সপ্তাহে নাকি একটা করে ইনজেকশন দিতে হবে। এতেও যদি চিনির মাত্রা না কমে, বেশী খাওয়ার প্রবনতা না কমে, ইনুসিলিন নিতে হবে।
ভয়ে আছি। খামিসামার কাছে প্রার্থনা করছি –
“হে প্রভূ, এই অভাগার মুখের স্বাদটা ছোটবেলার মত কমিয়ে দাও। ভাজা-পোড়া, ভাত আর লাল মাংসের প্রতি টান কমিয়ে দাও। নইলে ইনুসিলিন ইনজেকশনের কবলে পড়তে হবে।
ছোট বেলায় প্রার্থনা করে ছিলাম, মৃত্যুর আগে যেন ‘পৃথিবীর সব রকমের খাবার পদ’ খেয়ে বিদায় নিতে পারি। হে আল্লাহ তুমি তো হাজার খাবারের দেশ জাপানে আনলা। কিন্তু যদি খেতেই না পারি, তবে জাপানে দেশান্তরি হয়ে লাভটা কি হলো? যাইহোক, ভগবান তোমার কাছে রোগীমুক্তি ও মোহমুক্তি চাই।”
তৃপ্তির অপর নাম জীবন!
January 7, 2022