The Facebook bloggers, before making a comment on ‘Evolution and Adaptation’, please read again. the basic Evolution Theories, ‘Origin of Species’, and related books.
বানর কখনো মানুষ হয় না। এ’কথা শতভাগ সত্য। আরো সত্য বাঙালি বানর – কখনোই মানুষ হয় না ও হবে না। এক্ষেত্রে অভিযোজন ও বিবর্তন তত্ত্ব প্রায় সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিবর্তন নিয়ে সোসাল মিডিয়াতে অযথা কুতর্ক তার প্রমান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা ৬ বছর (১৯৯১-১৯৯৬) প্রকৃতি বিজ্ঞান, জিওলজি, বির্বতনবাদ ও অভিযোজন তত্ত্বগুলো পড়ে এটুকু বুঝেছি।
বানর বা বানর জাতীয় জীবেররা প্রকৃতির বিরূপ ও সুরূপ বাস্তবতার সাথে খাপ খাইয়ে দৈহিক ও মানসিক ভাবে পরিবর্তিত হয়। সৃষ্টি হয় টিকে থাকা নতুন বৈশিষ্ট্যের প্রজাতির। এমন পরিবর্তনের ফল- আজকের বুদ্ধিমান মানুষ। অভিযোজন ও বিবর্তন এখানেই শেষ নয়। বিবর্তন একটি ধারাবাহিক ও চলমান প্রক্রিয়া। এটি দীর্ঘদিন ধরে, সৃষ্টির প্রথম থেকে লক্ষ-লক্ষ বছর ধরে চলে আসছে, ও চলবে।
এটি নিশ্চিত হাজার ও লক্ষ বছর পর – আজকের মানুষ আর আজকের মত থাকবে না । দৈহিক গঠন ও মানসিকতায় বিপুল পরিবর্তন ঘটবে। যেমন বর্তমানের মানুষ ও আদিকালের মানুষের মত নেই। সোজা কথায় – এই পরিবর্তনই বিবর্তন ও অভিযোজনের ফল। খাপ খাইয়ে খাইয়ে শুধু মানুষ নয়, সকল জীব-প্রজাতিগুলো আরো উন্নত হয়। প্রকৃতির প্রতিকূল অবস্থার সাথে মানাতে পারলে পরিবর্তিত হবে, উদ্ভব হবে আরো উন্নত মানব ও প্রজাতি, না মানাতে পারলে মরে যায় । যেমন মরে গেছে ডাইনোসর ও নানান বিলুপ্ত প্রানী। এটাই প্রকৃতির শাশ্বত নিয়ম।
অভিযোজন ও বিবর্তন তত্ত্বগুলো যারা মিথ্যা বলেন, তারা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের প্রায় ১০০টি শাখাকে মিথ্যা বলতে চান, অস্বীকার করেন। যা মেনে নেয়া অসম্ভব, মানবজাতির জন্য ক্ষতিকর ও এক ধরনের মূর্খতা। তারা আসলে ইভালিউশন বিষয়টির বেসিস বৈশিষ্ট্য ও উদ্দেশ্য জানেন না, বুঝেন না।
ডারউইন কখনো যা বলেননি – তা খৃষ্টান, হিন্দু ও সালাফি মোল্লারা অনবরত বলেন। হিন্দু সাধু ও মুসলমান মোল্লারা বাইবেলকে অস্বীকার করলেও, তারা বাইবেলিক জেনেসিস অর্থাৎ সৃষ্টিতত্ব ঠিকই মানেন। কুতর্কটি আরো প্রখর হয়েছে – ফেইজবুকে বানর মার্কা সহজ ব্লগারদের মাধ্যমে, যাদের উপস্থাপনা খুবই হাস্যকর।
প্রকৃতি বিজ্ঞানে ডক্টরেট করা আমার অভিজ্ঞ প্রিয় স্যারেরা, যারা বিবর্তনবাদ পড়াতেন, তাদেরকে কখনো বলতে শুনিনি- বানর থেকে মানুষ হয়েছে। কিন্তু অনলাইন কানার হাটবাজারে, অন্ধ-অতিজ্ঞানীরা বিজ্ঞান ও সত্যকে নিয়ে কৌতুককর গল্প করেন, মহামতি ডারউইনকে বকাবকি করেন। যারা অধিকাংশ বুঝে না ও মানতে চায় না – ইডেন গার্ডেন বলতে বাস্তবে কোন গার্ডেন নেই, এটা মধ্যপ্রাচ্যের মিথোলজি, লোককথা। বৈজ্ঞানিক উপাত্ত, ফসিল-নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অতিআদি এককোষি জীবের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, কিন্তু ‘টেরেস্ট্রিয়াল প্যারাডাইস’ এর অস্তিত্ব ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব ও বিজ্ঞানে পাওয়া যায় না।
আমার অভিমত – কল্পকাহিনীর এ গল্পগুলো বাস্তব না হলেও অবশ্যই এগুলোর মনস্তাত্ত্বিক, আধ্যাত্ত্বিক ও মানবিক শিক্ষার বিচারে মহামূল্য আছে। তবে প্রতিকী বিষয়কে – বাস্তব ভেবে মানবজাতি যেন আজ মহাবিপদে আছে। আমি মনেকরি ‘আমাদের পরিবারই’ ‘টেরেস্ট্রিয়াল প্যারাডাইস’, আমাদের পিতা-মাতাই এই মহাকাব্যের মহানায়ক-মহানায়িকা।
মোটকথা গোরারা আজো মানতে ও বুঝতে চায় না – সব বিজ্ঞানী সমাজের সবচেয়ে জ্ঞানী, শিক্ষিত ও সচেতন মানুষ। আর ধর্মীয় সাধুরা অধিকাংশই অশিক্ষিত, মূর্খ, কোন বিদ্যালয়ে না গিয়ে, পাহাড়বাসী-নাগাসন্ন্যাসী হয়ে নিজেদেরকে মহাজ্ঞানী দাবী করেন।
আমার ব্যক্তিগত মত- ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের মিলানো ঠিক নয়। কারণ বিজ্ঞান হলো- প্রমান যুক্ত প্রস্তাবনা , আর ধর্ম হলো প্রমানহীন প্রস্তাবনা।
ধর্মে অনুমান ভিত্তিক, প্রমানহীন প্রচলিত মিথ থাকে, যা বিজ্ঞানে থাকে না। আজকে যা বিজ্ঞানে প্রমানিত, তা কালকে মিথ্যা প্রমানিত হলে, বিজ্ঞানীরা দুঃখিত হন না, প্রমানিত নতুন সত্যকে মেনে নেন, স্বাগত জানান।
অন্যদিকে তথাকথিত – আচার কেন্দ্রিক ধার্মিকেরা আদি গ্রন্থের কল্পলেখাকে মিথ্যা প্রমানের পরও মেনে নেন না। জেনে-বুঝে অযথা রাগান্বিত হন। যা গোড়ামি সৃষ্টি করে।
সমাজকে আফগানিস্তান ও সৌদির মত পিছনের দিকে টেনে রাখতে চান। ইউরোপ-আমেরিকা; জাপান-চীনের মত প্রগতির দিকে উৎসাহিত করেন না।
তাই পাঠ্যপুস্তকে অভিযোজন তত্ত্ব নিয়ে যেসব যাজক-প্রাদী-মোল্লারা বির্তক করছেন, তাদেরকে আবার বিষয়টি গভীরভাবে বুঝা ও মানার অনুরোধ রইলো। নতুবা ধর্ম, শিক্ষা ও সমাজ তিনটিই অন্ধকারে ঘুরপাক খাবে। আমি নিশ্চিত – অভিযোজন ও বিবর্তন তত্ত্ব মানলে কেউ – নাস্তিক, অধার্মিক, মুরতাদ, মোনাফেক ও তামসিক হবে না। বরং সত্যের অনুসারী হবেন।
সবার আগে আমাদের সবাইকে বুঝা উচিত্ – ধর্ম ও বিজ্ঞান দু’টোরই উদ্দেশ্য মানব কল্যাণ। ধর্ম যখন অকল্যাণের কারণ হয় – ধর্ম তখন ধর্ম থাকে না, অধর্ম হয়ে যায়।