এক দশক আগে ২০০৯ সালে, নয়াদিল্লীতে হিন্দু ডাল চাপাতি খেয়েছিলাম। যার স্বাদ আজো মুখে লেগে আছে। কয়েকদিন ধরে বার বার মনে পড়ছিলো। তাই সুন্দরী বউরে কইলাম, আটা কিনে আনবেন। আনলো।
আজ সকালে নিজে পাক্কা ৪০মিনিট খরচ করে বানালাম। কিন্তু শিবসেনা বাবুর্চিদের মত ফুলে নাই, গোল হয় নাই। তবে স্বাদ হয়েছে কাছাকাছি।
নিজের হাতে নিজের খাবার পাক করার স্বাদই আলাদা। ভালোবাসা ও কষ্ট থাকে বলে ভিন্নমাত্রা পায়। যা বাংলাদেশে অধিকাংশ বেডাইন পায় না। খাবারের জন্য সহজে – হয় বুয়া বউ, না হয় পড়ার রেষ্টুরেস্টুের হৈহুল্লার আশ্রয় নেয়।
সকালে ঢাকার রেস্টুরেন্টের ভীড়ের মাঝে ধমকা ধমকি করে, অনেকক্ষণ বসে থেকে, নিহাড়ি-পরোটা খাওয়াতেও অনেক আনন্দ আছে। আমি পূর্বে বাংলাদেশে গেলে প্রায় প্রতিদিনই সকালে নাস্তা রেস্টুরেন্টে করতাম। জাপানে আসার পর থেকে, বিশেষ করে ২০১৫ সালের পর থেকে জাপানিদের মত খাবার ও স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার কারণে খেতে পারি না। রুটির আগেই আমর চোখ পড়ে মেসিয়ারের কাঁধে ঝুলানো ময়লাপড়া সেতসেতে গামছা-তোয়ালের দিকে।
খাবার দেয়ার আগে, তাদের প্রায়শঃ হাত দিয়ে ঘাম মুছা, হুলে হাত দেয়া দেখার পর থেকে, আমার রেস্টুরেন্টু খাওয়া আগ্রহ কমে গেছে। তবে এখনও খাই। পরিস্কার ও বড় রেস্টুরেন্ট না হলে খেতে মন চায় না।
সবাই রেস্টুরেন্টে খাবারের জন্য অনেকক্ষন বসে থাকলেও আমাকে ঢাকায় এখন তেমন বসে থাকতে হয় না। মেজেজাটা হলে, আমি একই রেষ্টুরেন্টে, একই টেবিলে, প্রায় একই সময় নাস্তা খেতে যাই।
খাওয়ার শেষে গুড়ো সব টাকার সাথে প্রতিবারই ২০-৩০টাকা মেসিয়ারকে বসকিস দেই। ফলত – আমি রেস্টুরেন্টে ঢোকার সাথে সাথে – মেসিয়ার সব কাজ ফেলে আমার দিক দৌড়ে আসে, অপ্রয়োজনীয় ভাবে নিজ গামছায় চেয়ার মুছে দেয়। বলে
– বসেন স্যার, বসেন স্যার..
চাওয়ার আগেই ফাও ডাল-সবজি, বাড়তি মাংসার পাওয়ার সাথে সাথে, বাদশাহ শাহজাহানের সমাদর পাই।
কি শান্তি ঘরে ঘরে।