জিঙ্গেল বেইলস্ – ক্রীসমাসের গান

মহাত্না পিতা-মাতার ভালোবাসায় জেগে উঠে আমাদের প্রাণ । জাপানী বালক কুওজি কুনের বেলায়ও তেমনটা ঘটছে। তাকে আনন্দে রাখার জন‍্য মাতা-পিতা দু’জনে হয়েছেন আজ পারফরমার!

কুওজি জন্মের পর থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি , চোখে জটিল সমস‍্যা, ভালো হবার নয়। সন্তানের দৈহিক সীমাবদ্ধতায় বাবা-মা কেউ হতাশায় হাল  ছাড়লেন না! আরও বেশী কিভাবে ভালোবাসা যায় সে পথ সন্ধান করতে লাগলেন। ছেলে বড় হলে যাতে কষ্ট না পায়, হীনমন‍্যতায় নিজেকে যাতে গুটিয়ে না নেয়, অন‍্যকে আনন্দ দিতে যাতে পিছ পা না হয়। তার জন‍্য মাতা-পিতা দু’জনেই মরিয়া হয়ে উঠলেন! অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলেন, কুওজিকে হয় ভায়োলিন, না হয় পিয়োনো মিউজিক শেখানো হবে। সবাই তার সংগীত শুনে আনন্দিত হলে সে কখনও একাকিত্বের হতাশায় ভুগবে না। ছেলে একটু বড় হবার পর  নিজেই সিদ্ধান্ত নিল – ভায়োলিন শিখবে। ১০ বছর বয়সেই সে ভায়োলিন রপ্ত করে নিয়েছেন। নিয়মিত পারফমর্ করে। বাবা-মা তার সঙ্গে সঙ্গী হন। ছেলে কারণে মা-বাবা দু’জনেই যেন শিল্পী হয়ে গেছেন।

বাংলাদেশের বাবা-মা’র ঘরে প্রতিবন্ধি সন্তান আসলে যেখানে হতাশায়, কষ্টে ও অভিষাপ ভেবে জীবন অন্ধকার করে ফেলে! কুওজি পিতামাতা করলেন তার উল্টোটা! তাদের প্রেরণা দেখে আমার মনে হলো – ‘সমস‍্যা, সমস‍্যা না – আমরা যদি সমস‍্যাকে গ্রহন করে ঠিক সময়ে সঠিকভাবে সমাধান করতে পারি। সমস‍্যা হয়ে উঠে উন্নয়ন ও বিকাশের মাধ‍্যম’

ক্রিসমাস উপলক্ষে‍্য আজ কুওজি বাবা-মা’র সঙ্গে সান্তা সেজে অভিনয় করেছে, ভায়োলিন বাজিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেছে। ছেলের বাজনা শুনে সবাই আনন্দিত হয়েছে দেখে বাবা-মা অশ্রু ধরে রাখতে পারলেন না। সবাইকে আসরের পরে – কুওজি সান্তার মত উপহারের প‍্যাকেট বিতরণ করলো।

পুনচঃ – জাপানীরা ধমর্ীয় আচার উধ্বর্ে সবাই ক্রীসমাস পালন করে। কেউ অন‍্য ধমর্ের আচার মনে করে না । বরং আমি যখন জাপানী বন্ধুকে প্রশ্ন করলাম – তোমরাতো সিন্ত-বৌদ্ধিষ্ট, কেন এটা পালন কর? আবাক দৃষ্টি সে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলল – এটা এখন সাবর্জনীন, সবার! এভাবে ভেবো না, তোমার প্রশ্ন শুনলে সব জাপানীই কষ্ট পাবে, তোমাকে অবর্াচীন মনে করবে!

Japanese version of Jingle Bells, Christmas Song by Koushikun. His is an eyesight-handicapped boy, but excellent in love and violin performance!

Video link: https://www.youtube.com/watch?v=Zaw0L4ZrYPY

জাপানীদের ধর্মচচ্চা ও শতকরা অংক কষার স্মৃতি

জাপানীদের ধর্মচচ্চা ও শতকরা অংক কষার স্মৃতি

১৯৮৭ সালে এসএসসি পরিক্ষায় তিন অংক বিষয় ( গনিত, উচ্চতর গনিত ও বুককিপিং) তিনটাতেই আমি ৮০%+ লেটার মার্ক পেয়েছিলাম । আমি অংকে ভালো – এটা বলা যেতে পারে। কিন্তু জাপানীদের ধর্মপালন নিয়ে সাধারণ শতকরা অংকটি মেলাতে আমার ১০ বছর লেগেছে। জরিপ মতে জাপানে- ৮০ ভাগ বৌদ্ধিষ্ট , ৭০ ভাগ সিন্তু, ৩০ ভাগ নাস্তিক, ৩ ভাগ খৃষ্টান, ১ ভাগ অ‍ন‍্যান‍্য । সর্বমোট ১৮১% । বাড়তি ৮১% কোথায় থেকে আসলো?

২০০৫ সালে জাপান আসার আগে জানতাম, জাপানীরা বুদ্ধিষ্ট । আসার পর একই ঘরে বুদ্ধিষ্ট ও সিন্তুদের বিগ্রহ দেখে অবাক হয়েছিলাম। আগ্রহের সাথে বিষয়টি ঘাটাঘাটি করার পর জেনেছিলাম। একই জাপানী একই সঙ্গে ২ বা দুইয়ের অধিক ধর্ম পালন করে ।

এই বিষয়ে একটি প্রবাদ আছে – জাপানীরা জন্মে সিন্তু হয়ে, বাঁচে নাস্তিকের হয়ে আর মরে বুদ্ধিষ্ট হিসাবে । একজন জাপানি একাধিক ধর্ম পালন করে বলেই – শতকরা অংকটি জটিল হয়েছে।

বর্তমানে বৌদ্ধ ও সিন্তুর পাশাপাশি খৃষ্টান ধর্মের কয়েকটি রীতি আনন্দের সাথে পালন করে। শতভাগ জাপানী তরুণ জাপানীরা – ক্রিসমাস পালন করে। ক্রস নিয়ে নানা ধরনের পশ্চিমাদের মত ফ‍্যাশন করে । এমনকি খৃষ্টান না হওয়ার পরও চার্চে গিয়ে বিয়ে করে। পশ্চিমাদের আভিজাত‍্য বিয়ের পোষাক ও রীতি খুবই তরুণীদের খুবই পছন্দ । তাছাড়া সিন্তু বা টেডিশন‍্যাল বিয়ের চেয়ে চার্চে গিয়ে বিয়ে করলে খুবই কম খরচ হয়। নরকের ভয়, হিংসা ও শ্রেষ্টত্বে ত্রাসকে উৎসাহ দেয় না – এমন সব পথকেই জাপানীরা স্বাগত জানায়।

ক্রিসমাসের সময় – পৃথিবীর সর্ববৃহৎ আলোকসজ্জা একটি আয়োজিত হয় টকিওতে । খৃষ্টান না ওয়ার পরও ঘরে ঘরে কেক কেটে যীশুর জন্মদিন পালন করে। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, বাস-ফেরি, মার্কেট সবজায়গায় সবাই ক্রিসমাস-ট্রি’র শোপিস সাজায়। যীশু – জাপানীদের নবী না হলেও তাকে গ্রহন করেছে।

অধিকাংশ জাপানী বাস্তববাদী, হইলৌকিক হলেও মানবিকগুণে গুণান্বিত! বিজ্ঞানের জয়জয়াকারের মাঝেও এখন জাপানে নতুন নতুন ধর্ম অবতারনা ও প্রচারিত হয়। বহুমত বহুপদ এর মাঝেও এখানে হানাহানি,অস্থিরতা ও মতের শ্রেষ্টত্বের বড়াই খুবই কম। এ ব‍্যাপারে জাপান সরকারের নীতি – সব কিছুই করা যাবে , কিন্তু অন‍্যের ক্ষতি, মারামারি ও মানবাধীকার লঙ্গন করা যাবে না । কোন সভা, সঙ্গ বা ও উৎসবের আগে স্থানীয় সরকার থেকে ‘কারো জন‍্য ক্ষতিকর কিছু বলা বা করা হবে না’ বলে আয়োজকদের দস্তখত দিতে হয়। স্থানীয় প্রশাসন – আয়োজনের সফলতার জন‍্য কমিউনিটি রিডিও ও সরকারি পত্রিকায় প্রচার করে।
সবাই পুরাপুরি এই নীতি পালান করে । মারামারি ও ঝগড়া জাপানী সমাজে শুন‍্যের কোঠায়।

জাপানীরা ধর্মকে মতবাদের চেয়ে – মানুষ হওযার ও ভালোথাকার পথ হিসাবে গ্রহন করে। ভালো লাগলে সহজে যেমন গ্রহন করে, ভালো না লাগলে সহজে তেমনি পরিত‍্যাগ করে । এ জন‍্য পিতা-মাতা, সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি যাজকগনের জোড়-জব্বরদস্থি করে না। সবাই স্রষ্টাকে ‘খামিসামা’ বলে। একে অন‍্যের ধর্ম অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে, মিলে মিশে সবাই শান্তিতে দিন কাটায়।

Ryutaro san, a young farmer and photographer.

Ryutaro san, a young farmer and photographer.

Ryutaro san, a young farmer, and photographer. He born in main city but now lives in nature-town Hamochi. Academically he is an environmental scientist, however he became farmer and photographer. Whereas the young migrates to city and embracing punk culture and junk food, he is doing opposite to that.. He cultivates rice and sales. If someone buys his rice, he presents his photo-book free! Ryutaro san likes fashion also very much I took his interview to know his views and philosophy. I am glad to meet with him. I bought his rice and got one copy of book!

পথ চলা

আমি মনেকরি – স্বাথর্পরতার, আত্নকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও চচ্চর্া মানুষকে অমানবিক করে তুলে। একটা ত‍্যাগ না করে – মানবিক হওয়ার চেষ্টা বৃথা। একমাত্র পথ – অন‍্যকে বুঝা, মানা ও ভালোবাসা।

কাকি ফল তোলার স্মৃতি

কাকি ফল তোলার স্মৃতি

আজ কাকি ফল ( পারসিমন ) তুলতে গিয়েছিলাম এক বন্ধুর সঙ্গে, আরেক বন্ধুর বাগানে ! তবে আজ মাগনা কামলা না – হাফ বেলা কাজ করে ৭০ ডলার পেয়েছি আর  সঙ্গে মজার খাবার । কৃষক বন্ধুর বাগানে অজস্র পারসিমন হয়েছে এবার । ওরা স্বামী-স্ত্রী তুলে শেষ করতে পারছে না, কয়েকদিন গেলেই নষ্ট হয়ে যাবে, বিক্রয় করা যাবে না – বিশাল ক্ষতি হবে। তাই আমাদের কয়েকজনের সহায়তা নিয়েছে।

জাপানে বাংলাদেশের মত – মুজুর সংস্কৃতি নাই। মালিক-শ্রমিক মযর্াদায় সমান! সব কৃষক-কৃষানী  শিক্ষিত, নিজেই নিজের কাজ করে সাধারনত। পুরাপুরি স্বাস্থ‍্য-নিয়ম পালন করেন। লাভের চেয়ে বেশী মনযোগ দেয় অন‍্যের লাভ ও ভবিষতের ফলাফল, সুনাম। এমনকি – পারসিমনে ক‍্যাঁচির খোচা লাগলে বা মাটি পড়ে গেলে – সেটা প‍্যাকেট করে না , ফেলে দেয়। আমার হাত থেকে আজ ৩ টি পড়ে যাওয়ার পর, পরিপাটি-পারসিমনের প্রতি আমার মায়া হয়েছিল। কৃষকের ক্ষতি হবে ভেবে – কষ্ট পেয়েছিলাম। কিন্তু – কৃষক মিয়া বললেন – কয়েকটা মাঝে মাঝে পড়ে গেলে সমস‍্যা নাই । পড়ে যাওয়া ফল ঝুড়িতে রাখবে না।

বাংলাদেশে সব কৃষককে শিক্ষিত হওয়া দরকার । সবচেয়ে বেশী দরকার – কৃষিতে বিশুদ্ধতা, ভালবাসা ও সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়া। কারণ – কৃষি থেকেই খাবার আসে, আর সেই খাবার খেয়েই আমরা বাঁচি। আমার উপলব্দি – ভিডিও-ওয়েব সাইট না তৈরী হলেও জীবন চলবে, সঠিক খাদ‍্য উৎপাদন না হলে জীবন চলবে না ।

আগামী কাজ আবার কাকি তুলতে যাব – কৃষি শিক্ষার পাশাপাশি – টাকা ও আদর-আপ‍্যায়নের লোভে!

Sado is famous for Kaki ( Japanese Persimmon). This morning I  picked up huge persimmon from my friend’s garden. I am empowering to be an ideal farmer! I and my wife are planning to do full-phase organic farming from next year along with professional media production. We would like to produce our food proper way by ourselves.

মাগনা কামলা দেয়ার স্মৃতি

মাগনা কামলা দেয়ার স্মৃতি

‘মাগনা কামলা’ বাংলাদেশের মত জাপানেও জনপ্রিয়! ধানকাটার মৌসুমে আমি নানার বাড়ীতে দেখেছি, কোন চাষী তার বিশাল সোনাফলা ধান কাটা-সেরে উঠতে না পারলে – পাড়া-প্রতিবেশী সবাই মিলে একসাথে ধান কেটে দিত। পুরুস্কার হিসাবে সবাইকে জেফত খাওয়ানো হত।..এই গল্প ত্রিশ বছর আগের। আমি জানি না এখনও গ্রাম বাংলায় সহযোগীতার এই সংস্কৃতি টিকে আছে কিনা ।

একদিন এক বন্ধুকে এ ব‍্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, সে বলল – আমাদের এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমের বারোটা বেজেগেছে। টাকা ছাড়া কেউ কাজ করতে চায় না । যেচে সমাজ কমর্ করতে গেলেই মানুষ, হয় বলে – “আগামীতে নিবর্াচন করবা নাকি…”, না হয় বলে – “কোন এনজিও’র কাজ! …”

অথচ পূবর্ে ‘সংঘ বানানো আর কবিতা লেখা’ বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ-তরুণী সহজাত স্বভাব ছিল। সমাজ থেকে হারি (চাঁদা) তুলে, বাংলাদেশের অধিকাংশ স্কুল-কলেজ-পাঠাগার ইত‍্যাদি তরুণ-তরুণীদের স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ‍্যমে যাত্রা শুরু। এখন নাকি সংঘই শুরু হয় – এনজিও বানানোর জন‍্য । কয়েকদিন না যেতেই হয় বিদেশী ফান্ডের দিকে প্রতিষ্ঠাতারা হয় – ‘হা’ করে তাকিয়ে থাকে , না হয় টিকে থাকার নামে চড়া সুদের দাদন ব‍্যবসা ( মাইক্রোক্রেডিট) শুরু করে দেয়। সমাজ কমর্ হয় এখনও, কিন্ত মটিবেশন পুরাপুরি ভিন্ন – পূবের্ স্বেচ্ছাশ্রমিক তরুন-তরুনীরা সমাজ কল‍্যানের ব‍্যাপারে কম্প্রোমাইজ করতো না , এখন করে !…

Non-paid volunteer work, particularly during harvesting seasons is a popular culture in rural Japan. People love to help friends still beyond the business motivations. This weekend my wife has also helped her friend in harvesting! Commonly Japanese like volunteer work! There are many local NPO ( Non Profit Organization ) which generally run with community contribution. I am glad to see everybody inherit the ownership of public property and issues, as once did Bangladeshi young. The Japanese young and senior citizen are active in social work. When senior-professionals get time, s/he arrange event or training to share knowledge and skill. Roadside gardening, public place cleaning, and helping in public events are popular volunteer work in Sado.