আমিও সকল কালো আইন বাতিল চাই, তবে বাঙালিকেও একটু সভ্য হতে হবে, সেলফ সেন্সরশীপ শিখতে হবে। কোনটা করা যাবে, কোনটা করা যাবে না, কোনটা বলা যাবে, কোনটা বলা যাবে না – সেই সীমাটা বুঝতে হবে। যা ইচ্ছা তাই করা, যা মন চায় তাই বলা – পৃথিবীর কোন সভ্য দেশের সংস্কৃতিতে নেই। এটা গনতন্ত্র বা স্বাধীনতা না, এটা বিশৃঙ্খলা, অপব্যবহার, স্বার্থপরতা নগ্নপ্রকাশ।
স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচারিতা না। স্বাধীনতা মানে- দায়িত্বশীলতার সাথে, নিজের ও অন্যের ক্ষতি না করে, সমাজ কল্যান ও মানব কল্যান করা।
যে আইনকে আমরা কালো বলছি, সেই আইন ছাড়া কতটুকু অসভ্যতা আমরা দেখিয়েছি, কতজনের জান-মাল, মান-সস্মান নষ্ট করেছি, অযথা অন্যের কাপড় খুলে, হঠাৎ লুঙ্গিতে টান মেরে ইয়ার্কি করেছি, সেটাও আমাদেরকে জানতে, বুঝতে ও মানতে হবে।
নইলে আমাদের সেলফ জাস্টিফেকশনের মাত্রার তীব্রতা কমবে না। সমাজে সুশীলতা, গনতন্ত্র তথা প্রকৃত শান্তি ও উন্নয়ন আসবে না।
নিরপেক্ষ ভাবে যদি বিচার করি, আমি বলবো – দেশে বাক স্বাধীনতা নাই এই ধারণাটা ভুল । জাপান ও উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক বেশী স্বাধীনতা আছে। জাপানে অনুমতি ছাড়া অন্যের জামাই-বউ, পুত্র-কন্যার মুখ তো পরের কথা, নিজের পোলাইপানের ছবি মিডিয়াতে দেয়া যায় না। আইনে যা আছে তার বিপক্ষে টু শব্দ করা যায় না। কিন্ত আমার বাংলাদেশে হরহামেশা করি।
জাপান সহ উন্নত কোন দেশে, মানহানিমূলক সমালোচনা তো পরের কথা, অন্যে রারান্দায় দাড়িয়ে ছবিও তোলা যায় না।
– কপিরাইট বা প্রাইভেসী লঙ্গন করলে বাসায় পুলিশ আসে, মামলা হয়।
আমি একবার জাপানে পড়শী একজনের বাগানের সিঁড়িতে বসে ভিডিও করেছি, বাসায় পুলিশ এসেছিল, সাবধান করে গেছে। পুশিশ বলেছে,
– দ্বিতীয় বার ভুল হলেও, আপনি গ্রেফতার হবেন। কারণ লোকটি অভিযোগ করেছে,
– আপনার সে ডিস্টার্ব ফিল করেছে। অনিরাপদবোধ করেছে।
আর আমরা বাংলাদেশে, বিশেষ করে হেফাজত, বিএনপি-জামাতিরা পারলে তো প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর কাপড় খুলে ফেলে। মন্ত্রীমিনিষ্টারদের ল্যাং মারে, চাঁদের বুড়ির সাথে সাইদীর বিবাহ দেয়, ফেইসবুকে ঘোষনা দিয়ে রেলে আগুন দেয়, হিন্দুদের সম্পদ লুট করে, বাসে প্রেট্রোল বোমা মারে, চাপাতি দিয়ে ভিন্নমতের মানুষকে দৌড়ায়, মুমিনূলরা ধর্মের নামে মানুষ হত্যার পর হোটেলে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ফূর্তি করতে যায় ইত্যদি
যাইহোক যতই না বুঝার ভাব লই না কেন- আমরা সবাই বিষয়টা জানি ও বুঝি। আসলে আমরা অধিকাংশই স্বার্থপর, ‘গোয়ালঘর থেকে ছুটা বাছুরের মত চলছি। এমন অবস্থায় কড়া আইন না করে কি উপায় আছে? আইন – নরম বা গরম যাই হোক না কেন, প্রয়োগ হলে সব গরম হয়ে যায়, কেউ টু শব্দ করতে পারে না আইনের শাসনের দেশে।
আমার তো মনে হয়, আমরা যে ভাবে ডিজিট্যাল দুনিয়াতে অসুরের মত নাচি, সেভাবে সৌদি ও মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশ হলে শরীয়াহ’র নামে কতল/ শিরোচ্ছেদ প্রথা চালু হতো। ইউরোপ আম্রিকা ও জাপান সহ সব দেশে তো জরিমানা সহ মানহানির কেইস অহরহ হচ্ছে, রথি-মহারথি কেউ আইনের ফাঁক থেকে বের হতে পারে না।
তাই আমাদের দেশে আইনের ব্যবহারে শুভঙ্করি আছে, ফাঁকফোকড় আছে, স্বজনপ্রীতি-দলপ্রীতি আছে; এগুলো দেখতে আরাম লাগে না। যদি পুরোপুরো উন্নত দেশের মত হয়, আমি নিশ্চিত সবার আরো বেরাম লাগে।
আমি এ কথা ও অভিজ্ঞতাটা যাদে ভালো লাগেনি, উন্নত দেশে থাকা তাদের বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজন, দুলাভাই-শালাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, তারা কি সে দেশে বাংলাদেশে আইন ভেঙ্গে থাকে বা থাকতে পারে?
———
My related video
জাপানে আমাকে পুলিশে ধরে ছিল !!
– https://fb.watch/5iue-TDUJL