নোলকপরা নারীকে ছোটকাল থেকেই আমার রহস্যময়ী মনে হয়, অদৃশ্য ক্ষমতার অধিকারিণী মনে হয়। বাল্যকালে মায়ের সঙ্গে যখন নানার বাড়ীতে বেড়াতে যেতাম, গ্রামের সহজ-সরল এই নারীদেরকে জীনে-ধরা ও জীন-হাজির করতে পারা মনে হতো! ভয়ে ওনাদেরর কাছে যেতাম না! দেখলেই, দৌড়ে মায়ের কাছে চলে আসতাম । আজও সেই স্মৃতি মনে আছে।
এবার – পাথরঘাটায় ডকুমেন্টারী শুটিং করতে গিয়ে এই নারীকে দেখেও আমার রহস্যময়ী মনে হলেও, ভয় করেনি। তার হাস্যময়ী মুখ, কিন্তু করুণ চোখ দেখে তাকে আমার প্রথমেই অন্যরকম মনে হয়েছিল।
সাক্ষাৎকার নেয়ার পর জানলাম – জীবনের অধিকাংশ সময়ই তার কেটেছে গৃহহীন হিসাবে, অন্যের বাড়ীতে বাড়ীতে থেকে, অন্যের গলগ্রহে। দুই বছর আগে লাইট হাউজ প্রজেক্ট থেকে সে উপকূলীয়-হতদরিদ্র হিসাবে একটি ‘দুর্যোগ সহনশীল ঘর’ পেয়েছে। বলতে বলতে তার চোখ অশ্রুতে ছলছল করে উঠলো! বললো –
“এখন আমার ঘর হয়েছে, ঝড়ের ভয় পাই না, মানুষকে ভয় পাই না না…” বলতে বলতে সে আনন্দে কেঁদে দিল! তার কান্না আমাকেও কাঁদিয়েছিল!