২০০২-২০০৩ সালে আমি প্রথম জাপানী শিখেছিলাম। আমি জাপানী শিখলে বাংলাদেশ ছেড়ে জাপানে চলে আসবো তাই মিসুজু সান সায় দিত না, প্রায়শ: মিসুজু সানের সঙ্গে কলহ হতো । মিসুজু সানের যুক্তি ছিল, সব দক্ষ ও যোগ্য্য নাগরিকগন যদি বাংলাদেশ ছেড়ে উন্নতদেশে চলে যায় তাহলে বাংলাদেশ কিভাবে উন্নত হবে? কে বাংলাদেশের উন্নতি করবে? একজন বিদেশীর এমন বাংলাদেশ প্রেম দেখে আমি সেদিন অভিভূত হয়েছিলাম, লজ্জায় জাপানী শেখা আর জাপানে পাড়ি জমানোর চিন্তুা মাথা থেকে ফেলে দিয়েছিলাম। এর পর আমার পরিবতের্ মিসুজু সান নিজেই বাংলা শেখে । টানা ১০ বছর বাংলাদেশে থাকে, বাংলা সংস্কৃতি রপ্ত করে। ধরতে গেলে সে আজ বাঙালী, জাপানে এসেও আমার সঙ্গে বাঙলা কথা বলে, বাংলা খাবার রান্না করে। নিজেকে জাপানী নয়, জাবানী বলে আনন্দ পায়। ২০০৬ সাল থেকে www.e-jaban.com নামে একটি ওয়েবসাইটও চালাচ্ছে , যার মুল উদেশ্য জাপানে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রচার করা
প্রথম প্রথম আমরা ইংরেজী বাংলায় মিশিয়ে কথা বললেও আজ পুরাপুরি বাংলায় কথা বলি। আমার মনেই হয় না, আমার স্ত্রী বিদেশী! প্রথম এক বছর কষ্ট হলেও এর পর জাপানী শিকার প্রয়োজনবোদ হয়নি।
কিন্তু কষ্টের কথা, আজ সুশিক্ষার কারনে ছেলে-মেয়েরা জাপানে । কিন্তু আমি জাপানি বলতে পারি না। আমার ছেলে করোনেট ছায়ানটের নালন্দাতে পড়ার কারনে বেশ ভালোই বাংলা শিখেছিল । তার সঙ্গে বাংলা কথা বলতে পারলেও আনিকার সঙ্গে কথা একেবারেই বলতে পারি না। কারন সে জাপানী ছাড়া কিছুই বলতে পারে না। আনিকা আর কওকুনের সঙ্গে সঠিক ভাবে যোগাযোগের জন্য আমাকে জাপানী শিখতেই হবে। এইবার অবশ্যই মিসুজু সান অমত করেনি, কারন আমি বাংলাদেশ ছাড়িনি, আর ভবিষতে হয়তো ছাড়াও হবে না। সে এখন িনশ্চিত, আমি বাংলাদেশেই থাকবো । আমার ব্যবসা, পেশা আর চিন্তু এখন বাংলাদেশ কেন্দ্রিক । বাংলাদেশ এগিয়েও চলছে….
জাপানী শেখার জন্য আজ আমি সাদো সিটি অফিসে রেজিষ্টেশন করলাম। বিনা পয়সায় জাপানী শেখানো হবে। আমার আগ্রহ দেখে সিটি অভিসার 'হিরোফুমি সেইনটু ' সু খবর দিলেন, "জাপানী ভাষা শেখার পাশাপাশি আমরা জাপানী সংস্কৃতিও আপনাকে শিখাবো । আগামী মাসে আমরা আপনাদের জন্য পুরো সাদো ভ্রমনের ব্যবস্থা করবো।