জাপানী বাড়ি মানেই টুনটুনির বাসা! শুধু বাড়ি না, সব কিছুই যত সম্ভব ছোট ও যথাযথ বানানো জাপানীদের নৈপূন্য!
জেন গার্ডেন সহ জাপানী ট্যাডিশনাল বাড়ি আমার খুব পছন্দ। সেরকম একটি বাড়িও সিলেক্টও করেছিলাম! কিন্তু পুত্র-কণ্যার পছন্দ অাধুনিক বাড়ি! ওরা বলে – বাবা, ট্যাডিশনাল বাড়ি বড় ও সুন্দর হলেও ঠান্ডা ও স্বাস্থ্যকর না। তাই গণতন্ত্র মোতাবেক আধুনিক বাড়িতেই উঠতে হচ্ছে।
৮০০-৯০০ বর্গফুটের জায়গায় তিনতলা বাড়ী! ছোট আকার দেখে প্রথম আমার পছন্দ হয়নি, লিলিপুটের বাড়ি মনে হয়েছিল। কিন্তু ভিতরে এসে মন বদলে গেল ! পাঁচতাঁরা হোটেলের প্রায় সব সুবিধাই আছে কাঠ-ষ্টিল-কনক্রিটের তৈরী ছোট বাড়ীতে – পরিপাটি লিভিং রুম, অটো বাথটপ, ইলেকট্রনিক চুলা, টয়লেট, সংক্রিয় লাইটিং, হিট কন্ট্রোল ইত্যাদি।
এক সপ্তাহ ধরে রিমোটের বোতাম গুলোর ফাংশন মুখস্ত করা চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোন মতেই বশে আনতে পারছি না। ইলেকট্রনিক চুলার বোতামে কথা শুনে না । টয়লেটে – শুচুর সময় প্রায়শ মতুর জায়গায় চাপ দিয়ে দেই…ভাষার পাশাপাশি, টেকনোলজিক্যাল সংস্কৃতি ঝামেলায় আছি। রপ্ত করতে হয়তো আরো কয়েকদিন লেগে যাবে!
বাড়ি পরিবর্তন নিয়ে ঝামেলা আমাকে সাধারনত পোহাতে হয় না। এই বিশাল কর্মযজ্ঞটি ঢাকাতে ছোট ভাইয়ের উপর দিয়ে সাধারনত যায়! কিন্তু এবার আমার উপর দিয়ে গেল। ১০ দিন ধরে জিনিষ আনছি, শেষ যেন হয় না। আমি যে এত বইয়ের মালিক বাড়ি পরির্বতন না করলে হয়তো বুঝতামই না!
উল্লেখ্য, জাপান আয়তনে বাংলাদেশে প্রায় তিনগুণ হলেও জনসংখ্যা প্রায় সমান। জায়গার অভাব জাপানে নেই, তারপরও এরা ছোট ছোট বাড়ি বানায় – মুল কারণ ভুমিকম্প থেকে সুরক্ষা, চাকর-বাকর ছাড়াই নিজের বাড়ী নিজে পরিস্কার রাখা! ঝামেলা মুক্ত সহজ ও অাধুনিক জীবন যাপন করা। জাপানী বাস্তুসংস্থান কৌশল বাংলাদেশে প্রয়োগ করা দরকার! এতে যেমন বাড়ি বানানো খরচ কমবে, টাকা ওয়ালাদের ফ্লাট-গাড়ী কেন্দ্রিক মিথ্যা অহংকার-নবাবী কমবে, সুবিধা না দিয়ে ভাড়াটেদের প্যাকেট কাটার দৌরত্ন্যও কমবে। সমতা আনার মানসিকতা ও পরিবেশ সৃষ্টি হবে!