শরম ও ভয়ের কথা – আমার পুএধন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় না। তার জীবনের লক্ষ্য দোকানদার হওয়া, পাচক হওয়া! সুন্দর সুন্দর কেক বানাবে, কেক বানানো শেখার জন্য ফ্রান্সে পড়তে যাবে । এমন কেক আর খাবার বানাবে, সারা জাপানে নাকি আর কেউ বানাতে পারবে না! রাজবাড়ীতে থেকেও নাকি অর্ডার আসবে।…
আগে ভাবছিলাম সে মজা করেছে। এখন দেখি হাচাহাচা! এই বয়সেই সে রান্না করে, খাবারের বই পড়ে! গত মাসে পড়েছে পৃথিবীর বিখ্যাত ১০০০ খাবারের বই! ইয়া বড়, আমি তো দেখে হতবাক! ছেলের ইচ্ছামত মা’ও রাজি! আমার অবস্থা এখন ডাঙ্গায় জ্যান্ত পুটি মাছের মত!
আমি বললাম, পাচক কেন হতে চাও। সে বলে – মানুষকে ভালো খাবার খাইয়ে আনন্দ দিতে চাই।
আমি বললাম, তুমি তো গরীব থাকবা। সে বলে,
তুমি তো কিছুই জাননা দেখছি। এটা বাংলাদেশ না জাপান! এখানে ভালো খাবার ওয়ালা বিলিয়নিয়ারও হয়! অনেক সম্মানীও হয়, কেউ ছোট মনে করে না।
পুত্রের আস্থায় আমার টনক নড়লো – সত্যিই তো, টনি মিয়ার মত বাবুর্চি হতে পারলে খারাপ কি? শুনেছি বাংলাদেশে নাকি এক দক্ষ ও ধনী বাবুর্চিকে পাচকগিরি ছাড়তে হয়েছিল বিয়ে করার জন্য! কন্যাপক্ষের এককথা, ছেলে সব পছন্দ কিন্তু বিয়ে করতে হলে বাবুর্চিগিরি করা যাবে না।
বাংলাদেশে বাবুচর্ির রান্না খাইতে মজা, কিন্তু বিয়া করতে সাজা! কন্যাপক্ষ ঘুষখোর, সুদখোর, চোর, বদমাইশের কাছে বিয়ে দিতে রাজী; কিন্তু সৎ, নামী ও দক্ষ বাবুচর্ি’র কাছে বিয়া দিতে রাজী না। সাউথ এশিয়ায় দেশগুলোতে হয়তো একই অবস্থা। কিন্তু জাপানের অবস্থা ভিন্ন। সবাই শিক্ষিত ও ভালো রোজগার করে। সব পেশার মর্যাদা সমান। ছেলে সৎ হয়, বিয়ের সমস্যা হয় না।