স্কুল পরিস্কার করার তৃতীয় অভিজ্ঞতা আজ আমার । জাপানে পিতা-মাতারা একসঙ্গে কয়েকমাস পরপর নিদ্দিষ্ট দিনে স্কুল পরিস্কার করে। স্কুলে চাকর বাকর নেই। স্বাভাবিক দিনে ছাত্র-ছাত্রীরাই একসঙ্গে পাঠের অংশ হিসানে নিয়মিত স্কুল পরিস্কার করে।
এই আচারের প্র্রথম অভিজ্ঞতায় আমি হোচট খেয়েছিলাম। কাজটি করতে বেশ শরম লেগেছিল ২০০১ সালে। দেশের নাম করা বিশ্ববিদ্য্যালয় থেকে মাষ্টাসর্র্ করা সম্র্রাট শাহজাহান, বুয়াদের মত ঘর পরিস্কার করবে এটা কেমন কথা? বউকে যখন বললাম, ‘আমি এত লেখাপড়া করেছি কি ঘর পরিস্কার করার জন্য?’ তখন সে বলল – শিক্ষিত মানুষই তো ভালোভাবে কাজ করতে পারে! আপনার ঘর কে পরিস্কার করবে? স্কুলে আপনার ছেলে-মেয়ে পড়ে, সেটা তো আমাদেরই পরিস্কার করতে হবে। জাপানে সবাই এটা করে! আমি যখন বললাম, এরচেয়ে অনেক গুরুত্বপূণর্র্ কাজ আমার আছে! উত্তরে সে বলল – এটাও তো গুরুত্বপূনর্র্ যদি মনে করেন!…
এমন সময় – ঢাকার জাপান এম্বেসেসীতে ভিসার জন্য্য অপেক্ষা করা, সহযাত্রীর কথা মনে পড়ে গেল! তিনি বলেছিলেন – ভাই, জাপান যাবেন ভালো কথা, বাঙালী মন নিয়ে যাবেন না। কষ্ট পাবেন! ওরা কিন্তু কামলার জাত, সবাই সব কাজ করে! খানসামা-আয়া নাই।…
বিষয়টি নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করে বুঝলাম – এখানে সবাই শিক্ষিত, সবার রোজগার প্র্রায় সমান, আইনে ও মযর্র্াদায় সাম্য্যতা থাকার কারণে সামাজিক সম্পকর্র্গুলো বেশ সরল হয়ে গেছে। কাজে ও মানুষে মানুষে ছোট-বড় নেই। কেউ কাউকে হুকুম দেয় না, পারতপক্ষে অপমান করে না । সাটর্র্িফিকেট বা টাকার অহংকারে অন্যের উপর ছড়ি ঘুরায় না। কল্পনা করছি, বাংলাদেশে কি এমনটা সম্ভব? সব কাজ ও সবার মযর্র্াদা সমান হলে বাংলাদেশটা কেমন হবে?