“ছেলেমেয়েরা ফেল করবে কেন?” প্রধানমন্ত্রীর কথা, ন্যায্য কথা! আমি পুরাপুরি একমত! স্কুল তো লেখাপড়া ও পাশ করার জন্যই ! যদি কোন শিক্ষাথীর্ ফেল করে তার মানে সেই স্কুল বা শিক্ষকদের সমস্যা আছে! হয় লেখা-পড়া ঠিক মত করায় না, না হয় এমন ভাবে পড়ায় – যা থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা শিখতে পারে না ! অনেকে ‘কম মেধাবী’ বলে শিক্ষাথর্ীদের দোষ দিতে পারেন – আমি তাদের সঙ্গে একমত নই! পৃথিবীর সব মানুষ বিপুল সম্ভবনা ও মেধা নিয়ে জন্মায়! ( আইনষ্টাইন, নিউটন, এডিসন প্রমুখ যারা কম মেধাবী থেকে মহামেধাবী হয়েছেন তাদের জীবনী দ্রষ্টব্য ) ছাত্র-ছাত্রীরা জানে না, পারে না, বুঝে না বলেই তো স্কুলে যায়! স্কুলের কাজই তো বুঝানো, পড়ানো ও পাশ করানো!
জাপানের স্কুলে পাশ-ফেল নেই! কোন শিক্ষাথর্ী নিদ্দিষ্ট নম্বরের (গ্রেড ) কম পেলে – প্রথমে শিক্ষক, তারপর শিক্ষাথর্ী, এরপর বাবা-মাকে কৈয়ফত দিতে হয়। কোন শিক্ষকের বিষয়ে, একাদিক শিক্ষাথীর্ কম গ্রেড পেলে- কারণদর্শাও নোটিশের পরও একই ফল হলে, সেই শিক্ষকের চাকুরী চলে যায়! ব্যথর্ শিক্ষক হিসার জাতীয় ডাটাবেইজে নাম উঠে যায়, সারা জীবনের জন্য শিক্ষকতা খোদাহাফেজ!
উল্লেখ্য বাংলাদেশের মত জাপানে কোচিং সেন্টার বা গাইড বুকের সংস্কৃতি নেই ! অনুশীলনের পড়া ছাড়া বাড়ীতেও ছেলে-মেয়েরা তেমন পড়েও না ! যা শেখার স্কুলেই শিখে! জাপানের সংস্কৃতি ১০০% ভাগ পাশ, ১০০% শিক্ষিত, ১০০% সচেতনতা! এখানে পাশ-ফেলের জন্য ‘শিক্ষাথর্ীর মনে, বাবা-মা’র প্রাণে, সমাজে’র ঘ্রাণে হাহাকার নাই! সব নাগরিক সাধারণ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই জানে ও বুঝে! ১২তম ক্লাস পযন্ত সবাইকে বিজ্ঞান-সমাজতত্ত্ব-বানিজ্য-কলা সবই পড়তে হয়! এমনকি প্রতিবন্ধীকেও! এরপর পছন্দের পেশায় অন্ততঃ ২ বছর পড়াশোনার পর শুরু হয় পেশা ! (এরপর যার ইচ্ছা ও সামর্থ্য আছে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে গবেষণার পর গবেষণা, পিএইচডি ইত্যদি করতে পারে, কোন বাঁধা নেই) খুবই গঠনমূলক ও জীবনমুখী পদ্ধতি! সুন্দর দেশ ও জীবনের জন্য বাংলাদেশেও এমনটা আজই ও এখনই শুরু হওয়া দরকার!
বাংলাদেশের বর্তমান পদ্ধতি, আদিম! এখানে পরীক্ষার নামে অশিক্ষা, স্বাথর্পরতা ও যুদ্ধ জয়ের অহংকার শেখানো হয়! যা দিয়ে নিজের ও অন্যের জীবনে শান্তি আনা মুস্কিল! তাছাড়া লেখাপড়ার উদ্দেশ্য পরীক্ষথীর্ হওয়া না, শিক্ষাথর্ী ও ভালো মানুষ হওয়া। প্রতিযোগীতা করে বোডর্ে এক নম্বর হওয়ার পর – পেশা ও সমাজে ১ নম্বর মন্দ মানুষ হলে, সেই শিক্ষা দিয়ে কি লাভ?
বেশী পাশ করলে শিক্ষা খারাপ হয়ে যায়, কম পাশ করলে শিক্ষা ভালো হয়ে যায়, এই মনোভাব ও সংস্কৃতি ভুল! এ থেকে বের হওয়া একান্ত জরুরী!