গরীবের গরিবী কায়েম
১৯৯২ সালে আমার লেখা একটি অপ্রকাশিত রাজনৈতিক ছড়া, যার বাস্তবতা আজো যেন আছে ভিন্নরূপে!

—————————–
ভাইসব,
করবেন না কোন রব
এইবার আমি দাঁড়াইছি
পদটাও একটু বাড়াইছি
মেম্বার থেকে চেয়ারম‍্যান
সকলেই যোগ‍্যতা জানবেন
তারপরে সীল দিবেন!

ভাইসব,
আপনেরা তো জানেন
আমার অনেকগুলো পদ
আমি এক মানুষ এক মত
রাজা পাল্টায় রাজা আসে
এতে আমার কোন কিছু হইছে?
প্রথম থেইক‍্যা সরকারী দলে আছি
আমার ইচ্ছা খাইয়া-দাইয়া বাঁচি

ভাইসব,
কে কয় আমারে আলবদর
দেখুন তো আমাগো কি নাই কোন কদর?
কে কয় আমারে রাজাকার
আমাগো দেইখ‍্যা ভয় হয় না কোন বাপের ব‍্যাটার
আমার তেলের বক্তৃতা শুইনা
কেউ কয় আমারে শনিবারের মুক্তিযোদ্ধা
আমরাও দেশের লাগি যুদ্ধ করেছি এটাই মোদ্দাকথা
আমারও তো আছে ওসমানির সনদপত্র
এরজন‍্য অবশ‍্য তখন খরচ হয়েছিল কিছু মালপত্র!

মনে রাখবেন ভাই
ভোটটা কিন্তু আমি চাই
দেশ পাল্টাইলো
নতুন নতুন রাজা আইলো
অনেকে অনেক কিছু দিলো
আমি কিন্তু কিচ্ছু দেই নাই
আমার মত জনদরদী একজনও নাই
দিমু কেমনে বলেন ভাই?
দিয়েই যদি দেই, এ দেহটা ক‍্যামনে বাঁচাই?
ক‍্যামনে বছর বছর মাল বাড়াই?
দুই’টা কইরা নতুন গাড়ি নামাই?
আপনেগো পাশে কি আমি এক্কেবারে নাই?
সব সময়ই তো আপনেগো পিছনোই দেহ আর মাথাটা খাটাই!

ভাইসব,
আমি গরীবের গরিবী কায়েম করি
করি সংবিধান লঙ্গন!
করি স্বার্থের জন‍্য জীবনপণ!

ভাইসব,
করবেন না কোন রর
ঠিক কইরা ফালামু সব
যদি ভোটে জিতবার পাই
আপনেগো কোন চিন্তা নাই
গরীবের গরিবী কায়েম করবো
এতে কোন জিল্লতি নাই

ভাইরে ভাই,
ভোটটা কিন্তু আমি চাই!

আটানী বাজার, মুক্তাগাছা
৫.১.৯২
————-

বি.দ্র.: এরশাদের বন্ধের সময়, ১৯৯১-৯২ সালে, প্রায়শঃ বিশ্ববিদ‍্যালয় বন্ধ করে দেয়া হতো। রাজনৈতিক অস্থিরতা সময় অনেক সুবিধাবাদীর জন্ম হয়েছিল, চরম দাপট ছিল, যা আছো আছে হয়তো – একটু ভিন্ন রূপে! সেই সময় প্রিয় ছাড়াকার লুৎফর রহমান রিটনের রাজনৈতিক ছড়া নিয়মিত পড়তাম, যা এই ছড়াটি লিখতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল!
February 28, 2019