ভালোবাসার অবতার সান ইয়াং মুনের পরলোক গমন

আজ সকালে সিউলে ইউনিফিকেশন শান্তি আন্দোলনের প্রবর্তক ডক্টর সান ইয়াং মুন পরলোকে গমন করেছেন। ৯২ বছর বয়স্ক এই ব্যক্তিত্ব সারা জীবন ভালোবাসা আর শান্তি নিয়ে কাজ করেছেন। পিতার হৃদয় নিয়ে শত্রু-মিত্র সবাই ভালোবেসেছেন। সবাইকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন। মৃত্যুকে ব্যাখা দিয়ে গেছেন মৃত্যু উৎসব হিসাবে। তিনি মৃত্যুকে শিশুর জন্ম সঙ্গে তিনি তুলনা করে বলেছেন, মাতৃগর্ভের জন্য শিশুর জন্ম বিদায় হলেও, পৃথিবীর জন্য সেটা আনন্দের, সম্বর্ধনার। ঠিক তেমনি মৃত্যুও পৃথিবীর জন্য বিদায় হলেও পরলোকের জন্য এটা আনন্দের। যারা পৃথিবীতে ভালোবাসার চর্চ্চা করে, তাদের ভয়ের কিছু নেই। এই জগতে ভালোবাসার অভিজ্ঞতা থাকলে , ভালোবাসার জগত – পরজগতে শান্তি মিলবেই।

বিরানব্বই বছর বয়স্ক এই সারা জাগানো ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব ভালোবাসে দুনিয়া জয় করেছেন। তার বৈচিত্র্যময় জীবন দেখলে বুঝা যায়, ভালোবাসা কত শক্তিশালী। একেবারে শুন্য থেকে পৃথিবীর ১৮০ টি দেশে তিনি তার প্রচেষ্টা ছাড়িয়ে দিয়েছেন। বহু রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ তার কথা আর কর্মের ভক্ত। সারা দুনিয়ায় আজ তার ৭০ লক্ষেরও বেশী সরাসরি ভক্ত। ধর্মে-ধর্মে, জাতিতে-জাতিতে, গ্রোত্রে-গ্রোত্রে ভেদাভেদ নিমূর্লে তার শিক্ষা আর উদ্যোগ অন্যন্য । এক স্রষ্টার অধীনে পৃথিবীর সব মানুষকে একই পরিবারের সদস্য বানানোর প্রচেষ্টা তিনি ছিলেন নিরলস। সবাই আর্শীবাদদ আর শিক্ষা দিতে দিতে গণ্য হয়ে ছিলেন , ‘ট্যু ফাদার’ (প্রকৃত পিতা) হিসাবে। পরিবারকে তিনি বলেছেন ভালোবাসার চরনক্ষেত্র। আদর্শ পরিবার বানানো গেলে আপন থেকে পৃথিবী আর্দশ হয়ে উঠবে। তিনি বলেছিলেন, ব্যক্তি জীবন থেকেই মন আর শরীরের মিলনের মাধ্যমেই শান্তি যাত্রা শুরু হয়। স্বামী-স্ত্রীর একতার মাধ্যমে শান্তি পরিবারে প্রবেশ করে। এরপর নিঃস্বার্থ সেবা আর ভালোবাসার মাধ্যমে সমাজ থেকে দেশে, দেশ থেকে সারা দুনিয়ায় ভালোবাসা আর শান্তি ছড়িয়ে পড়ে।

শুধু কথায় নয়, কাজেও ডঃ মুন এটা প্রমান করেছেন। শান্তির পথযাত্রায় রেভারেন মুন বৃদ্ধ বয়স্ওে একমুহুর্তের জন্য বিশ্রাম নেননি। মৃত্যুর মুখামুখি কষ্টের সময়্ও তিনি শত্রুকে নিজ সন্তানের মতো ভালোবেসেছেন। বলেছেন, যাকে অপছন্দ , তাকে বন্ধু বানানের মতো ভালো কাজ আর পৃথিবীতে নেই। যে ব্যক্তি বা পরিবার অন্যের জন্য কাজ করে , তারা কখনো উজার হয় না, বিলীন হবে না।

ডঃ মুন ১৯২০ সালের ২০ ফেব্রেুয়ারী উওর কোরিয়ার জন্ম গ্রহন করেন। ‘ডিভাইন প্রিন্সিপ্যাল’ তার দর্শনগ্রন্থ। ওয়াশিংটন টাইমস, ইউপিআই, ব্রিজপ্রোট ইউনিভাসিটি, সান ইয়াং মুন বিশ্বাবিদ্যালয় সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংসৃ্কতি সংঘ, শান্তি বিষয়ক উদ্যোগ, সংস্থা এবং প্রচেষ্টার প্রবর্তন করেছিলেন তিনি। ধর্ম আর জাতিসংঘকে সংস্কারে তার ধারণা বিশ্ব আলোরিত ও অতুলনীয়।   ১১ সন্তানের জনক ডঃ মুনের ব্যবসা থেকে শুরু করে সব কিছুই মানব কল্যান কেন্দ্রিক। তার শান্তির বক্তব্য নিয়ে ৫০০ এর বেশী গ্রন্ত্র গ্রন্থিত হয়েছে।

September 3, 2012