২০০৫ সালে যখন প্রথম জাপানে আসি, তখন থেকেই আমি জাপানী আদলে বাংলাদেশের উন্নয়ন স্বপ্নে বিভোড়। জাপানে যখনই কোন কিছু ভালো দেখি, তখনই আপসোস্ করি , আহ বাংলাদেশে এমনটা হয় না কেন? এটা বাংলাদেশ কিভাবে করা যায়? এসব নানান বিষয় নিয়ে আমি এখন চিন্তা করছি, গবেষনা করছি।
আমার এ গবেষনা অন্য আট দশটা গবেষনা থেকে আলাদা। একেবারের ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে সমর্্পকিত। স্ত্রী জাপানী হ্্লে সাধারনত: বাংলাদেশী ্ও উন্নয়নশীল দেশের স্বামীরা ঘর জামাই হয়ে জাপানে চলে আসে। কিন্তু আমি সেটা করিনি, আমার স্ত্রী তা করতে দেয়নি। আমরা বাংলাদেশে টানা ১০টি বছর বাস করেছি। নিম্ন আয় ও অল্প মানের জীবনকে আমরা তোয়াক্কা করিনি। তুলনামূলক ভাবে দিনরাত পরিশ্রম কওে অর্থনৈতিক দৈনতা দূর করার পরও , শেষ পর্যন্ত আমাদের শিশুদেরকে শিা উদ্বাস্তু হয়ে জাপানে আসতে হলো। শিার পাশাপাশি আজ ওরা আনবিক উদ্বাস্তুও, অনেকটা সুনামীর সঙ্গে সম্পকিত। যেদিন ্ওরা ঢাকা থেকে নারিতা বিমানবন্দরে পৌঁছেছিল, তখনই সুনামী হয়েছিল। অনেক ভোগাান্তির পর ওরা চিবা থেকে ফুকুসিমা, ফুকুসিমা থেকে সাদোতে বাসা বাঁধলো। আমি বাংলাদেশে চলে যাবার প েছিলাম, কিন্তু তা হলো না। কারণ বাংলাদেশের শিা ব্যবস্থা ভালো না। সন্তানদেরকে প্রকৃত প েসুশিতি করতে হলে, জাপানে থাকতে হবে। আমার পুত্র ঢাকায় তুলনামূলক ভাবে সবচেয়ে ভালো স্কুল ‘ছায়ানটের নালন্দা স্কুলে পড়তো’। সেখানে ‘আনন্দের সঙ্গে শিা আর মানবিক গুণাবলীর ‘ কথা বলা হলেও কতটুকু করা হয়, সেই অভিজ্ঞতা নাই এখন বললাম। বাস্তবতার নিরিখে আমি এখন জাপানে বসবাসকে মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি, বাংলাদেশ ছাড়িনি। মাঝে মাঝে জাপানি আসি। শিশুদেরকে লালন করি, শিখি আর পরিবর্তনের প েকাজ করার চেষ্টা করি। এ চেষ্টা কখনো বন্ধ করা যাবে না।
আমি এখন, ‘জাপান স্মৃতি বাংলা প্রীতি’ নামে একটি বই লেখার চেষ্টা করছি। ভ্রমণ কাহানির চাইতে উন্নয়ন চিন্তা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এ অভিজ্ঞতা আর ধারনা হয়তো অনেকের স্বপ্নকে আশার আলো দেখাবে।
আমার প্রথমিক পর্যবেণ, জাপানী শিা ব্যবস্থা জীবনমুখী। শিার মুল উদ্দেশ্য পেশাজীবি দতার পাশাপাশি মানবিক গুণাবলী পালন করতে শেখা। বর্তমানে বাংলাদেশ শিার হার বাড়লেই, আমি আবদুল্লাহ আবু সাইয়্যিদ এর সঙ্গে একমত শিার মান অনেক কমেছে। শিা প্রতিষ্ঠাতে আনন্দের সঙ্গে শিা দেয়া ও নেয়া হয় না। এক অর্থে অযথা প্রতিযোগীতা আর স্বজনপ্রীতির মাঝে ছাত্র-ছাত্রীর শিতি হয়। না জেনে, না বুঝে বড় হয়। যারা এ প্রতিযোগীতায় টিকে তারা হয়ে উঠে অহংকারী ও সুশীল সমাজের অধিবাসী। আর যারা হেরে যায় তারা হয় হতাশাগ্রস্থ, এক অর্থে নিম্নশ্রেণী ্ও অনেক েেত্র অমানুষ বলে গণ্য হয়। ফলে সমাজ থেকে শ্রেণী চচ্র্চা. অশান্তি,দূর্ভোগ কমে না। ফলে অহংকারীরা পেশাতে গিয়ে সহজে ন্যায়পরায়নতার পরিবর্তে দুনীতিপরায়ন, জনসেবার পরিবর্তে স্বার্থপর হয়ে উঠে। একবার কোন মতা পেলে ছাড়তে চাইনা। শু্িদ্ধর পরিবর্তে নিজেকে মহামানব বানানোর সবরকম চেষ্টা করে। জাপানী সমাজ ও শিা ব্যবস্থা এই সমস্যা বহুলাংশে অতিক্রম করেছে।
আমি এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আমার ব্লগ, বই আর টাইম লাইনে লিখবো। আশাকরি আপনারা পড়বেন।