‘হারুকি মুরাকামি’ জাপানের তুমুলে জনপ্রিয় একজন লেখক । অনেকে বলেন- মুরাকামি, জাপানের হুমাযুন আহম্মেদ। আমি বলি তার চাইতেও বেশী। কারণ ডিজিট্যালের এই লেখালেখির মরা যুগেও, তার বই প্রকাশের আগেই ১৫-১৬ লক্ষ কপি প্রি-সেল হয়ে যায়। লেখালেখি করে যে বিত্তশালী হওয়া যায় – তার প্রমান করেছেন ‘হারুকি মুরাকামি’ ও আমাদের প্রিয় হুমাযুন আহম্মদে।
‘হারুকি মুরাকামি’ শুধু লেখালেখি না, নিয়মিত দৌড়াদৌড়ি, মানে এথলেট পছন্দ করেন। দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ান আর মনের আনন্দে পাঠকের মনজয় করা বই লিখেন।
আরেকটা কাজ তিনি করেন – নবেল প্রাইজের সময় আসলেই, নবেলে জন্য আলোচিত হন, কিন্তু শেষ মেষ পান না । হয়তো তার লবিং টা ডক্টর ইউনূসের মত পারফেক্ট হয় না।
নবেল যে শুধু কর্মগুণে পাওয়া যায় না, লেবিং এর জোড়ে পেতে হয়, তার প্রমান – ৯ বার তালিকা উঠার পরও গান্ধীজি পুরুস্কার না পাওয়া! ৬ বার আলোচিত হওয়ার পরও লিও টলস্টয় ঘরে না যাওয়া। কিন্তু বহুযুদ্ধ বহাল রাখার পরও অজানা কারণে ওবামার শান্তি নবেল পাওয়া; অর্থনীতিতে কাজ করে শোষনের জাল ‘ক্ষুদ্রঋণ’কে অফিসিয়াল রুপ দেয়াতে আমাদের মহামতি ইউনূসের পাওয়া, অবশ্যই পুরুস্কারটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
যাইহোক, জাপানি এই লেখক কেন নবেল পান না, সে বিষয় গত কয়েকদিন ধরে ফেইসবুকে এটাসেটা লেখা হচ্ছে। এক বন্ধু লিখেছেন,
‘আমি ও মুরাকামি এখনো নবেল পাইনি’।
আরেকজন লিখেছেন,
‘হুমাযুন আহম্মেদরা জনপ্রিয় হতে পারে, নবেল পায় না।’
মুরাকামি কি আসলেই জাপানের হুমাযুন?
একমত হই বা না হই, পছন্দ করি বা না করি, বাংলাদেশে নবেল পাওয়া মত অনেক লেখকের জন্ম হয়েছে, কিন্তু কেউ পাননি, এমন কি আলোচিও হননি।
এ বিয়েষে অতি সাম্প্রতিক লেখকের উদাহরণ – হুমাযুন আজাদ কে দেয়া যেতে পারে। আর নারী অধিকার আন্দোলনের কারণে, ‘তসলিমা নাসরিনের’ নাম বললে হয়তো অনেকে গোস্বা করবেন। তবে সম-অধীকারের সাহসী প্রস্তাবে সে অবশ্যই পুরুস্কার পাওয়ার যোগ্য। আমি মনেকরি তসলিমার অনেক লেখা, অরুন্ধতী রায়কেও হার মানায়।
মুরাকামি নবেল পাওয়া না-পাওয়া নিয়ে, সাহিত্য প্রেমিক আমার সুন্দরী জাপানি বউকে করলাম,
– এবার সাহিত্যে নবেল টা মুরাকামি পাবেন!
আমার বউ বলে,
– মুরাকামি জনপ্রিয় লেখক, তবে নবেল পাওয়ার মত না। পেলেও তা ঠিক হবে না। মুরাকামির লেখায় চমক আছে, তবে ডুগডুগি ইলিমেন্ট ও যৌন সুরসুরিতে ভরা, যা পাঠকেদেরকে যাদুর মত কাছে টানে। কিন্তু নৈতিকতা ও সুশীলতা কমই শেখায়। জাপানের বাহির থেকে মানুষ উনাকে অনেক মহান লেখক হিসাবে জানে, আসলে তত ভালো না।
বউয়ের কথা শোনার পর মনে হলে,
– মুরাকামি বাংলাদেশের শত বইয়ের জনক ইমদাদুল হক বা অরুণ চৌধুরীর মত নয় তো?
মুরাকামির বিনয়
নিজেকে কখনোই অনন্যসাধারণ মনে করেন না বিশ্বখ্যাত জাপানি জনপ্রিয় লেখক মুরাকামি।
একবার নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে দৌড়ানোর জন্য গেলে এক মহিলা তাঁকে জিগ্যেস করেন তিনিই সেই বিখ্যাত জাপানি ঔপন্যাসিক কি না?
তিনি জবাবে বলেন, না ঠিক তা নয়, আমি কেবলই একজন লেখক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যখন লোকজন আমাকে এভাবে জিগ্যেস করে আমার খুব অবাক লাগে, কারণ, আমি একজন সাধারণ মানুষমাত্র। বুঝতে পারি না মানুষ কেন আমার সাথে কথা বলতে চায়।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি নিজেকে একজন শিল্পী মনে করি না। লিখতে পারে তেমনই একজন মানুষ কেবল।’
বিস্তারিত // https://bit.ly/2X094ro
——-
ফটো ক্রেডিট: imdb.com