দুই যুগ আগের লেখা গুলো অবশেষে কাজের ফাঁকে ফাঁকে টাইপ করা শেষ হলো। ৩ মাস লাগলো! বেশী পৃষ্টা না, এ-ফোর ৬০০ পৃষ্টার মত, বইয়ের পাতায় ৮০০-৯০০ পৃষ্টা । ছোটগল্প, সুবচন, প্রবন্ধ, উপন্যাস সিজো, মিনিসাগা/ অনুগল্প ইত্যাদি! প্রাথমিক বাছাইয়ে অপছন্দ লেখা গুলো বাদ দিয়েছি, টাইপ করিনি। ফেলে দিয়েছি!
টাইপের পর অনেক প্রিন্ট করছি দেখে, হিসেবী জাপানি বউ বলে,
– এত কি প্রিন্ট করেন?
আমি হেসে কইলাম,
– আপনেকে কাগজ আর কালি টাকা দিয়া দিমু, চিন্তা কইরেন না । জাহাঙ্গির ব্যাংক থেকে টাকা তুলে রাখছে।
টাকা দিব শোনার পর বউ চুপ। কিন্তু আমি তো চুপ থাকতে পারি না। ২০ বছর মাল্টিমিডিয়া নিয়ে ব্যস্ততায, সাহিত্য রচনায় গ্যাপে কারণে নিজের প্রতি নিজে খেদ প্রকাশ করি।
– হায়রে দুনিয়া, সাহিত্য পড়ি নাই, পড়ছি বিজ্ঞান, তারপরও আজো সাহিত্যের জন্য সিরাজ পাগল! আজো লেখালেখি ছাড়লো না। মনেহয় মরণ পর্যন্ত চলবে! এই অনুরাগ বা ঝোঁকই হয়তো আমাকে একদিন পৌঁছে দিবে। আমি যা বলতে চাই, তা সবাইকে বলতে পারি, আমি আনন্দিত হব!
সাহিত্য-স্বপ্নের কারণে ভূ-বিজ্ঞান পড়ার পরও, বিজ্ঞানী হাওয়ার দরজা থেকে চলে এসেছি, ঘরে ঢুকিনি! না হতে পারলাম সাহিত্যিক, না বিজ্ঞানী! হলাম ফটোগ্রাফার, মাল্টিমিডিয়া ডিজাইনার! প্রতিদিন এত কর্মযজ্ঞের মাঝেনা লিখলেও পড়া ছাড়িনি। জনপ্রিয় সাহিত্যিক না হলেও, কিছু একটা হয়েছি, হতাশ হয়নি, কাউকে হতাশ করিনি, এ ভেবে বেশ ভালো লাগে। লেখালেখির পুনরুন্থানের কারণে সামনের দিনগুলো হয়তো আরো ব্যস্তময়, স্বপ্নমুখি হব, নিজের ও পরিবারের জন্য কষ্টকর হলেও মেনে নিতে হবে!
পেশাজীবি লেখক হওয়ার জন্য ১৯৯৫-৯৬ সালে, আমি ইংরেজীর আগে বাংলা টাইপ শিখেছিলাম, গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখেছিলাম! সেই স্মৃতি আজো ভুলেনি। তবে কোন সৎ চেষ্টাই বৃথা যায় না । প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে, দুইদিন আগে বা পরে সুফল আসে ও আসবেই!
টাইপ ও ডিজাইন শেখার মিশনটা কমপ্লিট হওযা কারণে মনেপ্রাণে অবিরাম আজ সুখ লাগছে! চলতি তিনটা বই বাদে, এত লেখা লিখেছি, দেখে আবারো নিজেকে ধন্যবাদ দিলাম। এবার বই হিসাবে রেডি করার পালা। গ্রন্থিত করতে পারলে বাঁচি। ভারমুক্ত হবো। পুরোপুরি আসান পাবো!