জাপানে পীরপ্রথা – কেউ ফিরেনা খালি হাতে খাজা তোমার দরবারে
( Visiting lucky Uka Shrine for Goodluck!)
 
আজ দ্বিতীয় বাবের মত পর্বতে, পীরের দরবারে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য মহৎ, টাকা ওয়ালা হওয়া! আমার বহুৎ শখ – বিলিয়নিয়ার হওয়া। এজন্য এ বিষয়ে যখন যা পাই, লুফে নেই, চেখে দেখি- হওয়া যায় কিনা।
 
আমার এই অপূর্ব ইচ্ছা, অন্য কেউ না জানলেও আমার বউ বিষয়টা জানে, গুরুত্ব দেয়! আমি বিলিয়নিয়ার হলে, সে’ও যে আপনা-আপনি বিলিয়নিয়ার হয়ে যাবে, সেই বিশ্বাসটা তার আছে।
 
গতকাল থেকেই বউ বলেছে,
– সকাল ৮টায় আমরা, ‘লাকি মাউনটেনে যাবো’! সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠবেন!
 
সাদোতে একটি সিন্তু মন্দির আছে, নাম তার উকা স্রাইন (Uka Shrine)! পাহাড়ের চুঁড়ায় এ মন্দিরে, নববর্ষের ছুটিতে; হাড়কাঁপা শীতের মাঝেও আস্তিক-নাস্তিক, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নিবিশেষে হাজার হাজার মানুষ, হাফাতে হাফাতে ১৮০০ ফুট উঁচ্চু পাহাড়ের মাথায়, উঠে! বিশুদ্ধ বরফ ঠান্ডা পানিতে হাত-মুখ দিয়ে শুদ্ধ হয়, ঘন্টা বাজিয়ে স্রষ্টা-খামিসামাকে জানান দেয়,
– বাবা, আমি এসেছি! আমি বিপদ গ্রস্থ, রক্ষা কর!
 
প্রার্থনা শেষে সবাই দান বক্সে বড় অঙ্কের নোট দান করে! ইচ্ছা-পুরুন কাগজে নিজের ইচ্ছা লিখে দেয়! সবার বিশ্বাস,
– কাগজে যা লিখা হবে, তা পূর্ণ হবে।
 
আমি গতবার লিখেছিলাম, পুরোটা পূর্ণ হয়নি । তবে ব্যবসা ভালো হয়েছিল। দানের পর এবার ‘ইচ্ছাপূরন’ কাগজ লেখায় আগ্রহ জাগেনি! তাই লিখেনি! চোখ বুজে প্রার্থনা করার সময় এক অদৃশ্য বানী শুনতে পেয়েছিলাম,
– হে পুত্র, তোমাকে টাকা দিতে পারলাম না । তোমার কাজের সঙ্গে টাকা যায় না। টাকা পেতে হলে তোমাকে ব্যবসা বদলাতে হবে! তাই স্বর্গ সুখ দিলাম!
মুহুর্তে দেখতে পেয়ে ছিলাম, এক অনন্য অন্যজগতের ছবি! যা চোখ খোলার সাথে সাথে মিলিয়ে গেল!
 
প্রাথর্না শেষে কে যেন কানে কানে বলছিল,
– আজ থেকে তার দুঃচিন্তা করবা না ! আগামী কালকে কি হবে, গতকাল কি হয়েছিল তা ভাবার দরকার নাই! ভয় পাবে না! দ্রুত সফলতা পাবে । নীবরতার আমার বানী শুনতে পাবে! স্বর্গ স্বর্গ করিও না, এই জগৎটাই স্বর্গ! দৃশ্যমান এ স্বর্গে যে স্বর্গ পায় না, সে অন্য জগতেও পাবে না।
 
গতবার বুঝতে পারিনি! এবার প্রথম থেকেই পীর সাহবকে দেখতে চেয়েছিল। চারদিক খুঁজেছিলাম! পেলাম না! একটি মোমবাতি জ্বালানে-বিগ্রহ ছাড়া! বউকে জিগাইলাম!
– পীর সাহেব কই?
বউ হেসে কয়,
– আপনার হৃদয়ে আছে! দেখতে চাইলে দেখতে পাবেন!
 
ফেরার পথে, পাহাড় আর সুমুদ্র তীরের রাস্তা যখন আসছিলাম! গভীর মনোযোগে পাহাড়-আকাশ আর সমুদ্রের দৃশ্য দেখছিলাম! প্রশান্তিতে মন ভরে গেল! চারদিক স্বর্গ স্বর্গ লাগছিলো! মনে হলে – যেমনটা চাই, তেমনটাই আছে সবকিছু!
January 2, 2019