ছেলেবেলায় সিনেমা দেখার স্মৃতি
আমি সিনেমা পাগল একজন ঠান্ডা মানুষ। বাল‍্য‍কালে বন্ধুরা যখন পালিয়ে পালিয়ে হলে সিনেমা দেখতো, তখন আমি বাড়ীতে ঘোষনা দিয়ে, বাবা-মা’র কাছ থেকে পাঁচসিকা/ দেড়টাকা নিয়ে ছবি দেখতাম্ প্র্রতি সপ্তাহে ২-৩ টা। সিনেমা না দেখলে আমি ঠিকমত লেখাপড়া করতে পারতাম না! বিষয়টা খুলে বলার পর বাবা-মা দু’জনই সায় দিয়েছিলেন- লেখাপড়া ও চরিত্র নষ্ট না করে, যা খুশি করতে পারিস!
 
সিনেমাকে আমি ধরেছি ছেলেবেলা থেকেই , কিন্তু সিনেমা আমাকে ধরতে পারেনি । প্র্রথম থেকেই বানিজি‍্য‍ক সিনেমা আমাকে তেমন টানে না । ( তবে কিছু কিছু গান আমাকে বেশ মুগ্ধ করে। গত দুই বছর ধরে ‘লাভ আজকালে’র এই গানটির নির্র্মান আমাকে বেশ ভাবাচ্ছে, কি সুন্দর সেট ও উপস্থাপনা…
https://www.youtube.com/watch?v=Qk9bPR2wfJ4 )
 
সিনেমার সুদিক আমার জীবনে বেশ প্র্রভাব ফেলেছে। কোন ভালো সিনেমা দেখার পর আমার মাথায় সবসময় ঘুরপাক খায় – এই ছবিটা কিভাবে বানানো হলো? এই আগ্র্রহই হয়তো আমাকে মাল্টিমিডিয়ার জগতে টেনে এনেছে…
 
১৯৮৩-১৯৯৫ এর মাঝে হল কেন্দ্র্রিক জনপ্র্রিয় প্র্রায় সব ছবিই আমার ২-৩ বার দেখা। ছেলেবেলায় লেখাপড়া ফাকি না দিয়ে, সিনেমা হলে গিয়ে একা একা (সাধানতঃ কোন বন্ধুকে সঙ্গে নিতাম ও যেতাম না ) সিনেমা দেখার স্মৃতিতে আমি আজো রোমাঞ্চিত হই। মনে আছে, ছোট বলে – বাবা আমাকে কয়েকবার হলের সামনে পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছিলেন। টিকেট কেটে হলের লোকদের বলে দিতেন, আমাকে দেখে রাখতে। পরে যখন হলের সিনেমাগুলোতে পণর্র্-কাটপিচ শুরু হলো, তখন সিনেমার কথা বললেই বাবা রেগে যেতেন। বলতেন – টিভি দেখ, সিনেমার দরকার কি? টিভিতেই তো প্র্রতি সপ্তাহে (ছায়াছবি ও মুভি অফ দ‍্য‍্যা ইউক) সুন্দর সুন্দর সিনেমা দেখায়!
 
এই ডিজিটালের যুগেও জাপানে সিনেমার কালচার আছে । আমার ছেলে-মেয়েও কোন ভালো মুভি এলেই – হলে গিয়ে সিনেমা দেখে। আমার স্ত্র্রী ‘মিসুজু’ সান ওদেরকে হলে দিয়ে আসে, নিয়ে আসে। বেশ সহযোগীতা করে। আমি যখন বলি- ডিভিডি তে তো মুভিটা পাওয়া যায়। তখন ছেলে-মেয়ে বলে – বাবা, হলে গিয়ে বড় পদর্র্ায় সিনেমা দেখার মজাই আলাদা। সিনেমার প্র্রতি ওদের ভালোবাসা দেখে মনে হয়, আমার ছোটবেলার স্বভাব ছেলে-মেয়ে দু’জনেই পেয়েছে।
October 8, 2016