আমাদের নান্নু ভাই

আমাদের নান্নু ভাই

টোকিও তো যে কয়েকজন সুনামধন‍্য বাংলাদেশী আছেন নান্নু ভাই তাদের একজন। প্রবাসীর বাংলাদেশী ও বাংলাদেশ সম্পকিত সকল সাউথ এশিয়ান ও জাপানিরা তাকে এক নামে চিনেন ও শ্রদ্ধা করেন।

আদর্শ জাতীয়বাদী নান্নু ভাই একজন প্রভাবশালী ব‍্যবসায়ী। গাড়ি ব‍্যবসার সাথে সাথে নানান ধরনের এক্সপোর্ট-ইমম্পোর্ট ব‍্যবসা করেন, কনসালটেন্টসীর পাশাপাশি সামাজিক সুকর্মের সঙ্গে অতিসক্রিয়। প্রবাসীদের বিপদে পাশে থাকেন, সব রকমের সহযোগীতা করেন। বিষয়টি আমার হৃদয় জয় করেছে।

আমি দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে নান্নু ভাইয়ের কাজ করি। জে.এম.সি.সি ( জাপান মুসলিম চেম্বার অফ কমার্স) ও তার অফিসের কাজের মাধ‍্যমে নান্নু সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ হয়। কাজের মাধ‍্যমে আমি সব ক্লাইন্টকে পারিবারিক সখ‍্যতা গড়ে তুলি। নান্নু ভাইয়ের সঙ্গেও তেমনটা হয়েছে। ২০১৯ সালে বৈশাখী মেলাতে শুধু একবার ছালাম বিনিময় হয়েছিল। এরপর কখনো সম্মুখ দেখা হয়নি।

এবার টোকিও বৈশাখীমেলার এসাইমেন্ট করে ফেরার দিন তাকে ফোন করেছিলাম,
– ভাইজান, চলে গেলাম। এবার দেখা হলো না । আগামী যাত্রায় দেখা হবে ।

এ’কথা বলতেই তিনি বললেন।
– আজ যেতে পারবেন না। অন্ততঃ একদিন থাকতেই হবে। গুরুত্বপূর্ণ কথা ও কাজ আছে।
– তাহলে হোটেলের রুম বুকিং দিলাম।
– আরে না, হোটেলে থাকবেন কেন? আমার বাংলো আছে। সেখানে আপনি থাকবেন। আপনি আমার অতিথি।

ইভেন্ট-এসাইনমেন্ট ছাড়া আমি সাধারণত বাড়ির বাহিরে রাত্রি যাপনের দাওয়াত গ্রহন করি না। কিন্তু নান্নু ভাই এমন ভালাবাসামাখা কন্ঠে দাওয়াতটি দিলেন, আমি আর না করতে পারলাম না। রাজি হযে গেলাম।

আমি যদিও দীর্ঘদিন ধরে জাপানে থাকি, জাপানি জীবন ও আচারে অভ‍্যস্ত হলেও, টোকি’র ব‍্যস্ত জীবনকালচারে একেবারেই অভিজ্ঞ নই। সব সময়ই আমার টোকিও যাত্রা সিনকানসেন ষ্টেশন থেকে নারিতা এয়ারপোর্ট পর্যন্তই সীমাবন্ধ থাকে।

টোকিরও অতি প্রয়োজনীয় ষ্টেশন ও জায়গা গুলোও আমি আজো চিনি না । ট্রেন মিসিং, ভুল ষ্টেশনে যাত্রা, হেন্ন সুন্দরীদের পাল্লায় পড়া ইত‍্যাদি শঙ্কা নিয়ে চিবাতে তার অফিসে চলে গেলাম। ষ্টেশনে নিজেই আমাকে নিতে আসলেন। তার বাড়ি, গাড়ি, নারী ও অফিস দেখে, প্রথম পলকেই আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

একেবারেই পুরোন ঢাকার কোটিপতি ব‍্যবসায়ীর আয়োজন। অফিসের আলিশান সাজসজ্জা, ফোন আর অনলাইনে মুহু মুহু গাড়ির অর্ডার দেখে,
‘জাপানে ব‍্যবসা করতে না পারা’ নিয়ে আমার যে প্রিজোডিস ছিল কেটে গেল। আস্থা ফিরে আসলো
– ইচ্ছে করলে, মানুষের সঙ্গে সৎযোগাযোগ থাকলে, সেবা দিলে যে টাকা রোজগার করা সহজ – তার বাস্তব প্রমান পেলাম নান্নু ভাইয়ের কাজকর্মে।

ব‍্যবসার কথার পাশাপাশি, বাস্তবতা, সুখ-শান্তিতে ভরা জীবনের গল্প বললেন। ঢাকায় রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হওয়ার পর- নানান দেশে থাকার পর জাপানে কিভাবে দেশান্তরি হলেন, স্থায়ী হলেন সে গল্প শুনে অভিভূত হলাম। কিভাবে জিরো থেকে একজন মানুষ ইচ্ছা করলেই যে সম্পদশীল, ক্ষমতাবান হিরো হতে পারে তার প্রমান জাপান প্রবাসী নান্নু ভাই।

গ্রামীণ সরলতায় আমার কথা বলা তিনি প্রশংসা করলেন। আমার ডিজাইন সেন্সে মুগ্ধ হয়ে তার অনলাইনে গাড়ী বেচাকেনার ই-কর্মাস সাইট বানানোর কাজটি দিলেন। টাকা রোজাগরের আনন্দ যখন আমার হৃদয়ে উপচে পড়ছিল, তখনই বললেন,

– চলেন, আপনাকে নিয়ে বেড়াতে যাব। আপনি তো টোকিও তে কখনো ঘুরেন না।

নিজে গাড়ি ড্রাইভ করে নিয়ে গেলেন ‘টোকিও একুয়া সিটি’ তে।
যা বিখ‍্যাত সমুদ্র তলদেশের টানেল ষ্টেশন ও শপিংমল। (Tokyo Wan Aqua-Line Expressway)এখান থেকেই সমুদ্র তলদেশের টানেলের মাধ‍্যমে ‘ওতা কাওযাসাকি ও কিজারাজু’ দুই শহরকে যুক্ত হয়েছে। রেইন-বু বিজ্রের সৌন্দর্য, টুরিষ্ট ইলিমেন্টে সাজানো একুয়াসিটিতে চারদিকে থেকে আসা সমুদ্রের ঠান্ডা বাতাসে আমার প্রাণ ভরে গেল। সবচেয়ে ভালো লাগলো জাপানের শত্রুদেশ আমেরিকার ‘ষ্টেচু অফ লির্বাটি’ রেপ্লিকা দেখে। শুত্রুকে ভালোবাসলে যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়, তারই নির্দেশন হিসাবে জাপান এটি বানিয়েছে। শত্রুদেশ থেকে, এটমবোমা নিক্ষেপকারী আমেরিকা আজ জাপানের বন্ধুরাষ্ট্র।

আমি শুধু নামে নয, কাজেও মহামতি । কারো সঙ্গে রেষ্টুরেন্ট ঢুকলে, আমি কখনো, দেশে কিংবা বিদেশে- কাউকে বিল দিতে দেই না। কিপটা জাপানিদের মত চুপ থাকি না। নান্নু ভাই একের পর এক, স্টারবার্ক সহ নানান দামি-দামি রেষ্টুরেন্টে নিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রথম দিকে আমি পেমেন্ট করতে চাইলেও, পরে আর চাইনি, জাপানি হয়ে গিয়েছিলাম। আমি বুঝে গিয়েছিলাম – আমি বিল দিলে এসাইমেন্ট থেকে পাওয়া সব টাকা শেষ হয়ে যাবে। খালি হাতে বাড়ি গেলে জাপানি সুন্দরী বউয়ের নিশ্চিত বাংলা ঝারি খেতে হবে। সেই ভয়ে আমি তঠ্স্থ ছিলাম।

নান্নু ভাইয়ের কাছ থেকে আমি যে মুল‍্যায়ন ও আথিতিয়তা পেয়েছি, আমি তা কখনো ভুলবো না । আমার ধারণা ছিল – অতিদাম ও কঞ্জুসদের দেশ- জাপানে থাকতে থাকতে প্রবাসীরাও হয়তো জাপানিদের মত কিপটা হয়ে য়ায়। আসলে তা হয় না। পদ্না-মেঘনা-যুমুনার মত বিশাল বাঙালি হৃদয়। তা কখনো কুলশিত হয় না। তার প্রমান পেলাম নান্নু ভাইয়ের পরম ভালোবাসায়।

নান্নু ভাই অসংখ‍্য ধন‍্যবাদ । ভালো থাকবেন নান্নু ভাই, সত্ত্বর আশাকরি আবার দেখা হবে ইনশাল্লাহ।

True Father and Love Guru!

True Father and Love Guru!

(দুই ভূবনের দুই গুরু, যাদের বানীতে আমার নতুন জীবনের শুরু!)

These two evangelists promoted opposite philosophies and lifestyles. True Father promoted family values, contrarily Osho promoted free culture and celibacy. I have caught both of them and am leading my life journey in the middle, in a safe zone. The evangelists give me the light to look at religions and spirituality beyond the traditional ritual-based approach of isms.
However, because of these two controversial great men, I understand Zen, Love, Family Relationships, and TAO philosophy correctly.

It was 27 years before I read about Tao, family values, and Zen in their books. I was surprised and interested in learning more. However, they opened my third eye.
Now I can ask questions to anyone on any issue without any fear, which has changed my views and life. Challenging mainstream views causes unrest in my mind, but I eventually get appropriate answers.

Now I can try to stay in the present moment with mindfulness. The good result, these mystic men’s spiritual hits encouraged me to come in Japan, where Zen philosophy was born.
Now I am moving to become a Tao-Zen artist and philosopher, not a monk.

এ.আই এর সঙ্গে মরণদৌড়!

এ.আই এর সঙ্গে মরণদৌড়!

কবি শুদ্ধের ভাষ‍্য – আমি আর্টিফেসিয়াল ইন্টিলেজেন্স (‘এআই’), মেশিন আর অনলাইন রোবটের সঙ্গে দৌড় দিয়ে আর পারি না। তারা হাজার হাত-পা-মুখ নিয়ে এক সঙ্গে দৌড়ায়। ওরা দানব, আর আমি মানব! আমি ক্লান্ত, আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আর পারি না, আমি মুক্তি চাই! এক যুগ পর বুঝলাম- আমি এতদিন মানসিক ভাবে প্রতিবন্ধী ছিলাম। সব পাবার ও থাকার পরও মনে হতো , আমি সর্বহারা!”
কবি শুদ্ধের আক্ষেপ শুনে মহামতি বলেন,
– হঠাৎ কেন তোমার এমনটা মনে হলো?
কবি শুদ্ধ বলে,
– সে‍্যাসাল মিডিয়াতে সামাজিকতা, লে-ঠেলা। অসমাজিকতাই এই মিডিয়ার ধর্ম। একে অনে‍্যর বেসিক ভালো চায় না, হিংসা-ক্ষোভ, দুঃখ-করুণায় ভরপুর। অনলাইনে লক্ষ‍ মানুষের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে আমি অশান্ত ও অসুখী ছিলাম। আমাকে সব সময় অসন্তুষ্টির বন‍্যা ভাসিয়ে রাখতো। সোস‍্যাল মিডিয়াতে যখন কারো উন্নতি ও হাসিখুশি মুখ দেখতাম, মনে হতে সে কেন আমার চেয়ে বেশী সুখি হবে, সে কেন এত সফলতা পাবে? এ’সবই তো আমার পাওনা।
– তাই নাকি? তাহলে তো তুমি অন‍্যজগতে ছিলে!
এ’কথা বলে মহামতি অট্টহাসিতে হাসে
– এবার বুঝেছ, কেন অনে‍্যর সঙ্গে তুলনা করতে মানা করি? তুলনা হলো হুকের মত, একটার পর একটা অঘটন ঘটায়। তাই তুলনা না করাই শ্রেয়?
– এখন তো থেকেছে, কয়েকদিন পর তো আবার অসুরের মাথার মত আবার কলাঙ্গারটি গজাবে, তখন কি করবো?
– সহজ পথ হলে, এটা মেনে নেয়। তুমি ইউনিক, কারো চেয়ে ছোট না, কারো চেয়ে বড় না। তুমি অমৃতার সন্তান। যাকে চাও, সে তোমার ভিতরে আছে ও থাকবে।
– এগুলো তো তত্ত্ব কথা।
– তত্ত্বই তো তথ‍্য হয়, যখন তা ভালোবাসার সাথে পালিত হয়।
– বুঝলাম। আরেকটি মহাভুল করে সময় নষ্ট করেছি মহামতি।
– কি ভুল?
– নিজেকে একেবারেই সময় দেইনি। গত এক যুগ, একদিনের জন‍্য নীরবতা পালন করে নিজের পথ যাচাই করিনি। সব সময় অন‍্যকে বদলানোর চেষ্টা অমূল‍্য সময় ও সম্ভবান নষ্ট করেছি।
– ঠিক ধরেছে। পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো অন‍্যকে বদলানো। আর সবচেয়ে সহজ কাজ হলো, নিজেকে বদলানো। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ সহজ কাজটি রেখে, কঠিন কাজে অতি মনোযোগী!
– জি মহামতি, আমি দিকভ্রান্ত ছিলাম।
– আমি সব করবো, আমি সব পারবো, সব কাজ আমার, সব সফলতা আমার – এমন স্বার্থপর চিন্তা শান্তি দেয় না! সুখ দেয়া। ব‍্যক্তিকে মিথ‍্যা ও কল্পনায় মোহগ্রস্থ করে রাখে, তিলেতিলে বিনাশ করে, কষ্ট দেয়।
– তাহলে কি করার?
– কিছুই করিও না, বর্তমানে থাকো। প্রতিটি মুহুর্ত, প্রতিটি বাস্তবতা মেনে নিয়ে এনজয় কর, তাহলেই হবে!
– বুঝেছি, তবে কাজটি সহজ মনে হলেও সহজ নয়।
– শুরু কর, সহজ হয়ে যাবে। আমার পরামর্শ – নিজেকে সময় দিলে। নিজের ১০০টি কাজ থেকে সঠিক কাজটি বাছাই করে, ফলাফল আশা না করে- নিষ্কাম কর্ম করলে শান্তি পাওয়া যায় ও যাবেই।
– তথাস্তু মহামতি।

Official Video of Tokyo Boishakhi Mela, 2023.

যারা টোকিও বৈশাখী মেলায় আসতে পারেননি, তারা ঝটপট ভিডিও’টি দেখে ফেলুন। কি আনন্দই হয়েছিল সেদিন, তা ডিজিট‍্যালি উপভোগ করতে পারবেন।

The persons who could not join in the Boishaki Mela 2023, s/he will get an experience from this video.
I filmed, and edited this official vid

eo with core team of Boishakhi mela. This is 3rd time, I have worked for this biggest Bengali festival in Japan.

Thanks the organizer Dr. Aleemuzaman and his team for continuous and excellent efforts for NRB (Non-residence Bangladeshi )’s entertainment and encouragement in Japan. I have been again inspired from this event to contribute in the community.

My love and prayer for all future efforts of TBM and NRB.

সাত ঈশ্বর!

সাত ঈশ্বর!

( একটি বাস্তব গল্প! স্রষ্টা যদি অন্য ধর্মের হয়, কি হবে শেষ বিচারের দিনে? )

কবি শুদ্ধের পড়ার রুমের দেয়ালে ঝুলানো ইষ্ট-এশিয়ান সৌভাগে্যর সাত ঈশ্বর ছবিগুলো মহামতি খুব মনেযোগে দেখছিলেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তাদের নাম পড়ছিলেন, তাদের কর্মগুণ মনে করার চেষ্টা করছিলেন। এমন সময়, কবি শুদ্ধ কফি নিয়ে রুমে আসে। মনোযোগে কেড়ে নিয়ে, কফিকাপ হাতে দিয়ে মহামতিকে জিজ্ঞাসা করে,

– এত মনোযোগ দিয়ে কি দেখছিলেন মহামতি?

– সৌভাগের সাত দেবতাদের ছবি। কি অপরুপ অয়বর! তয় তুমি হঠাৎ দেয়ালে অন্য ধর্মের দেবতাদের ছবি ঝুলিয়েছ কেন?
– পরকালের প্রস্তুতি মহামতি? কোন সময় চলে যাই বলা তো যায় না।
– বুঝলাম না! তোমার কি মৃত্যুভয় জেগেছে?
– না! আপনার শিক্ষা মেনে সকল প্রকার ভয়কে জয় করার চেষ্টা করছি। এই ছবিসূত্রের হিসাবটি সহজ। মৃত্যুর পর যদি পরকালে গিয়ে দেখি, ঈশ্বর আছে, তবে সেটা আমাদের বাবা-দাদার শেখানো ধর্মের নয়, অন্যধর্মের ঈশ্বর, তখন কি হবে? তার প্রস্তুতি!
– এসব কি আবোল তাবাল বলছো?
– হ, সত্য মহামতি! আমি সংশয়ে পড়েছি। আমরা যেসব প্রবক্তাদের কথা মানি ও জানি, পরকাল নিয়ে তাদের সবার বর্ণনাই তো প্রিডিকশন, অনুমান! আজ পর্যন্ত তাদের কেউ তো মৃত্যুর পর, পরকাল দেখে এসে আমাদেরকে সত্য ঘটনা বর্ণনা দেননি।
কবি শুদ্ধের কথায় মহামতি আতঙ্কিত হয়ে বলেন,
– যদি তাহাই হয়, তবে তো মহাঝামেলা হয়ে যাবে! তুমি, আমি, সকল নবী-রসুল, সাধু-সন্ত সবাই তো তখন বিচারের এক কাতারে থাকবো। কি আনন্দ, শতভাগ সমাজতন্ত্র! তয় তোমার হঠাৎ এই ভাবনা মনে হলো কেন?
– মহামতি, আপনি তো জানেন, পৃথিবীতে হাজার হাজার ধর্ম । সকল ধর্মের নিজস্ব – পরকাল, স্বর্গ ও নরক নিয়ে বিচিত্র গল্প আছে। সব মিথই চমৎকার। জাতিসংঘের ইউনাস্কোর মতে- পৃথিবীতে আজো ৩৬০০ এরও বেশী জীবিত ধর্ম ও উপধর্ম রয়েছে। সবাই নিজেদের গল্প, আচার ও বিশ্বাসকে সঠিক, শ্রেষ্ঠ ও সুন্দর দাবী করে। তাদের প্রবক্তাদের শ্রেষ্ঠ মানুষ দাবী করে। সকলের মাঝে মাত্র তো একটি ধর্মের ঈশ্বর- প্রকৃত ঈশ্বর, বাকীরা তো রুপকথা, মিথ্যা, বানানো। তবে কোনটি সত্য? সবাই তো নিজেরটাকে সত্য বলে, এই ভাবনা আমাকে সকল ধর্ম জানার প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে। আমি ‘ওয়ার্ল্ড ক্রিপটারস্’ পড়ছি। ধর্মদর্শন বুঝার চেষ্টা করছি।
– খুব ভালো পরিকল্পনা। প্রিজোডিস ত্যাগ করে, আনন্দের সাথে পড়, ভালো ফল পাবে।
– মহামতি, একটি প্রশ্ন। যদি ঈশ্বর আলসেই আপনার ধর্মের না হয়ে, অন্য ধর্মের হয়, তখন পরকালে ঈশ্বরের সামনে আপনি কি করবেন, কি বলবেন?
– আগে বল, তুমি কি করবা?
– আমি সোজা ঈশ্বরের কাছে গিয়ে, পা সাপটে ধরে মাফ চাইবো! অষ্টাঙ্গ প্রণাম করবো। আর আপনি কি করবেন?
– আমি কিছু করবো না। চোখে চোখ রেখে- নির্ভয়ে ঈশ্বরকে বলবো। পৃথিবীতে আমি যে ধর্মটি পালন করেছি, সেটা তোমার দেয়া। যে ধর্মের ঘরে পাঠিয়েছ, সেটা তোমার ইচ্ছায় হয়েছে, দুনিয়াতে আমাকে পাঠানোর আগে তুমি পছন্দ করার কোন সুযোগ আমাকে দেওনি। যদি দিতে, তবে আমি তোমার ধর্ম নিয়েই জন্মাতাম। সুতরাং যদি অন্যধর্ম পালনে আমার দোষ হয়ে থাকে, তবে সেই দোষে তুমিও দোষী।
– ঈশ্বর যদি বলে, তোমাকে তো বিচার বিশ্লেষন করার জন্য বিবেক বুদ্ধি দিয়েছিলাম।
– আমি বলবো, আমি তো বিচার বুদ্ধি দিয়েই জীবন যাপন করেছি। ধর্মের পথেই ছিলাম, ভালোবাসার পথেই ছিলাম। স্বার্থপর হইনি, কাউকে ঠাকাইনি, গুন্ডামি-মাস্তানি করিনি, যুদ্ধ-বিগ্রহে সায় দেইনি, চুরি-ডাকাতি-দূনীর্তি করিনি, নেশা-ভান খাইনি, ধর্ষণ-বহুগামিতা করিনি, খুনখারাপি-বাটপারি করিনি, পরপদে- পরসম্পদে লোভ করিনি, অহিংসার বাণী প্রচার করেছি। তোমার দোষে যদি আমি দোষ করে থাকি, তবে তুমি আমাকে নরক দাও । আমি মাথা পেতে নিলাম।
– যুক্তি তো সুন্দর মহামতি, স্রষ্টা কি মানবেন?
– মানবেন না কেন, তিনি তো পরম দয়ালু। আমি নিশ্চিত পরম ঈশ্বর আমাকে নরক দিবেন না। স্বর্গ দেয়া তার সিদ্ধান্ত, আমার নয়। আমি স্বর্গের লোভ ও নরকের ভয় করি না। আমি তার সান্নিধ্য চাই। এটাই আমার পরম ইচ্ছা।-
সাদো, জাপান